Articles published in this site are copyright protected.

About Me

আমার দুটি কথা:

blank-notepad-over-laptop-coffee-cup-office-wooden-table-34739245এ ব্লগে আমার ছাপা হওয়া কিছু উল্লেখযোগ্য লেখা মনের ব্যথা,অনুভ’তির ছোঁয়া এখানে থাকবে। বেশ দিন থেকে এটি মনের মাঝে পুষে রাখলেও এটিকে সাজাতে আমার যথেষ্ট সময়ের অপচয় হয়। ক’ বছর আগের আমার একটি সাইট ছিল “বাতিঘর” নামে, আর সেখানে আমার পছন্দের অনেক লেখা, ছিল। সে লেখাগুলোর উদ্দেশ্য ছিল যেন মানুষকে ধর্মের জটিলতাকে সহজ করে দেখাতে পারি। ভুলের কিছু জটিলতা যা আমার চোখে ধরা পড়েছে, সেটি আমি সফলভাবে স্পষ্ট করতে ওটি করি। ইন্টারনেটে আপলোড করা একটি ডিবেইট আমার মনে একটি নাড়া সৃষ্টি করে। “ইসলাম ইজ নট এ পিসফুল রিলিজিয়ন” সেখানে আইয়ান হিরসি আলী নামের সোমালিয়ান এক ইসলাম ত্যাগী মহিলার অবস্থান অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের তসলিমার সাথে তুলনীয় হতে পারে। মিডিয়াতে সাহসী মেয়ের টাইটেল পাওয়া ধর্মত্যাগী এ মেয়ে, ধর্মের অনাচার খুলে দিতে বদ্ধপরিকর। অনেকেই ধর্ম জানতে তার দ্বারস্থ হচ্ছেন। কারণ সে দ্বার ভেঙ্গে বের হয়েছে, সবাই ধরে নিচ্ছেন সে সম্ভবত ধর্মের সব খবরই জানে ভাল। তাদের কাছে সে হচ্ছে এ সময়ের বড় ধর্মবেত্তা। সে যদি ধর্ম বুঝতে পারতো, তবে এ ধর্ম তাকে ত্যাগ করতে হতো না। ধর্ম তার জীবনে আমৃত্যু অষ্টেপৃষ্টে লেগে থাকতো। তার কথা শুনে মনে হলো ধর্ম জানতে তাকে আরো বহু বছর সাধনা করতে হবে হয়তো, যদিও সে ধৈর্য্য সে ধারণ করতে পুরোপুরিই ব্যর্থ হয়েছে বলেই হয়েছে ধর্মত্যাগী।

সেদিনের ডিবেটে দু’পক্ষে দু জন করে বক্তা ছিল, এক পক্ষে জেবা খান ও মাজিদ নেওয়াজ  অন্য দিকে আয়ান হিরসী আলী ও ডগলাস মারি । ইসলামের পক্ষের দু’জনাই অনেক সুন্দর যুক্তি দেখালেও আয়ান হিরসী আলীর দলই ডিবেটে জেতে। কারণ ঐ গ্যালারির সমর্থণ ছিল ইসলামের বিপক্ষে, তাই যেন মনে হলো, স্বভাবতই প্রতিটি প্রশ্নকর্তার প্রশ্নই ছিল ইসলামের বিরুদ্ধে। আমি খুব মনোযোগ দিয়ে এটি শুনি। মনে হচ্ছিল এসব প্রশ্নের জবাব সচেতনদের দেয়া উচিত প্রচারে ভিডিওতে লেখনিতে। দেয়া যে হচ্ছে না তা নয়, তারপরও প্রতিটি মানুষই এক একজন খলিফা হিসাবে পৃথিবীতে অবস্থান করছে। হযরত আদমের ঘটনা স্মরণ করলে আমরা ইহুদী খৃষ্টান ও মুসলিমরা জানি মানুষ হচ্ছে আল্লাহর খলিফা। সেদিন থেকে সে গুরুদায়িত্ব আদমজাতির কাঁধে চেপেছে শত পার্সেন্ট। তাদের বিতর্কীত বিরোধী পয়েন্টগুলি লালদাগে সনাক্ত করা জরুরী। নীতির প্রশ্নে সব অনাচারই ইসলামের বৈরী শক্তি, বিরোধীপক্ষ। তাদের আক্রান্ত পয়েন্টগুলি হচ্ছে ইসলাম যুদ্ধে গড়া জেহাদী ধর্ম, নারী নির্যাতনকারী, শিশু নির্যাতনকারী, নারী শিক্ষা বিরোধী, অন্য কোন গডের অবস্থান স্বীকার করে না, ফাউন্ডার ফাদারের উপর নিকৃষ্টভাবে বহুবিবাহের অভিযোগ, ৬ বছরের মেয়েকে রিপিটেডলি রেপ করার অভিযোগ, বার বার উচ্চারিত হচ্ছিল শরিয়া শব্দটি, হোনার কিলিং, সুইসাইড বোম্বিং এসব। ইসলামের অজস্র সুন্দরকে অস্বীকার করতে না পেরে তারা বলে তাদের দৃষ্টিতে ইসলামের ফাউন্ডিং ফাদার কিছু ভালো করেছে কিছু খারাপ করেছে, যুক্তি হচ্ছে এ ধর্ম মানুষ হত্যা করে । আয়ান হিরসি আলীর সোজা কথা পৃথিবীতে কোন একেশ^রবাদী ধর্ম শান্তির ধর্ম হতেই পারে না, বক্তা প্রচন্ড শক্তিতে একথা বার বার প্রকাশে ব্যস্ত। ডগলাসের যুক্তি হচ্ছে মোহাম্মদ অতি খারাপ একটি মানুষ, যেন তাকে একটি সাধারণ মানুষের ক্রেডিটও দেয়া যায় না, তিনি একজন অতি নিকৃষ্ট ধারার অনাচারি মানুষ। তাদের বক্তব্য হচ্ছে ইসলাম ত্যাগ করলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়। অনেক আগে বৃটিশ পাকিস্তানি জার্নালিস্ট লেখক তারিক আলীর মুখে শুনেছিলাম যে আয়ান হিরসী আলী ধর্মের অনেক হিসাব না জেনেই যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছে, যেমন মেয়েদের খতনার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে দেখা যায়। এটি একটি ইসলামিক রীতি বলে তার কোন এক বক্তব্যে ছিল। সবচেয়ে বড় কথা ৯/১১ থেকে হিরসী আলী বিক্ষুব্ধ, মনে হলো তার অফিসিয়াল ইসলামের আক্রমণ তখন থেকেই শুরু।

ইসলাম ত্যাগী বলেই সবার দৃষ্টি ঐ মেয়ের উপর গেলেও ধর্মের যুক্তিতে মনে হলো এখনো প্রাইমারীর ময়দানে দাঁড়িয়ে হিরসী আলী। আমার চোখে যুদ্ধের শুরুতেই তার গলতি ধরা পড়লো। ৯/১১ সম্বন্ধে তার ধারণা কতটা অস্বচ্ছ হলে এমন মন্তব্য তার জন্য উপযুক্ত হয় বা জেনেও না জানার ভান করে আছে কিনা, সেটিও বোধগম্য হচ্ছে না। যাক্ আমার লেখাতে কার্টুন, দোররা, ফতোয়া, বিবি আয়েশার বিতর্কীত বিয়ে, নবীর একাধিক বিয়ে, জিহাদ, ৯/১১, মোটকথা এখানে জমা করা সব যুক্তির লেখাই কমবেশী ভান্ডারে আছে বলেই মনে করছি। মুসলিমরা গাফেল বলেই ১৪০০ বছরেও সাধারণ জটিলতাগুলি আজো ধর্মকে লেজেগোবরে করে রেখেছে। আর এরা এটিকে বারে বারে তরতাজা রাখছে, এটি মন্দের ভালো। এরা থাকাতেই আমরাও বাড়তি তৎপর হচ্ছি। মাঝখানে  বিরুদ্ধবাদীরা অতি আস্ফালনে ব্যস্ত সময় পার করছে, এতে উল্লসিত তসলিমা, আয়ান হিরসী আলী, সালমান রুশদিগংরা। এরা যুক্তির তলোয়ার দিয়ে অন্তত এ ধর্মের বিরুদ্ধে  তেমন শক্ত কোন কথা বের করতে পারেনি বলেই মনে হয়, কোনকালে পারবেও না। কারণ যে সব যুক্তি তারা দেখায় তার সবই অপযুক্তি। কথা ছিল এ ধর্মের সুন্দরকে ওপেন করে দেখানোর। এ খোলাসা কাজের দায়দায়িত্ব ছিল আমাদের নিজেদেরই, ভিন কেউ এসে এটি করে দিবে না, আর কোন নবী এসে খোলাসা করারও কথা নয়, পূর্ণতা প্রাপ্তির পর ও রাস্তা বন্ধ সিলকরা । ইসলামে বিভেদের যে বিতন্ডা সেটিও নবুয়তি যুগের পরের রাজনৈতিক সৃষ্ট জটিলতা, ধর্মের গলদ মোটেও নয়। যার কারণে যদিও আমি মূলত ধর্মের গবেষনাতেই সময় ব্যয় করি। এর মাঝে অপরাজনৈতিক কারণ দৃষ্টিগোচর হওয়াতে  মাঝে মাঝে অবশ্যই সোচ্চার হয়েছি, সেটিও অবশ্য করণীয় বলেই মনে করেছি। তাই রাজনৈতিক লেখাও বেশ কিছু জমে গেছে আমার ভান্ডারে। একজন গবেষক হিসাবে এটি বড়দাগে আমি দেখি যে, ইসলামের বড় অনাচার হচ্ছে ‘বিভক্তি’ যার অবস্থান অকুরআনীয়। সজ্ঞানে কোন মুসলিম এটি সমর্থণ করতে পারেন না। কিন্তু রাজনৈতিক ভৌতিক রোগ মুসলিমকে এ যাবৎ সত্যচ্যুত করে রেখেছে নবীযুগ গত হবার বেশ পর থেকেই। এসব সুস্পষ্ট হওয়া জরুর। বিভিন্ন দেশে এ রাজনৈতিক অসৎ ভুত নানাভাবে সমাজকে আজো কুরে কুরে খাচ্ছে। এটি তরূণ ইসলামকে তার তারূণ্যের শুরুতেই হৃদপিন্ডে কামড় বসিয়েছে, বন্ধ হয়নি, সেটি আজো চলছে। যার প্রেক্ষিতে নৈতিকতার স্বার্থে ধর্ম যেমন আলোচিত হওয়া দরকার ঠিক তেমনি কপট রাজনীতিও মানুষকে পিষ্ট করে চলেছে। এ দুই অস্ত্র মানবতাকে ধ্বংস করতেই ব্যবহৃত হচ্ছে। পৃথিবীতে হিং¯্রতার সাক্ষরে সনাতন নামধারী হিন্দু, ইদানিং বৌদ্ধরাও, অতীতে খৃষ্টান ইহুদীরা যা করেছে, জগত বিস্ফারিত থেকে শুধু হজম করেছে। কিন্তু সেটি দেখতে গভীর দৃষ্টিশক্তির দরকার। যাদের দেখার কথা ছিল তারা নানাভাবে গাফেল থেকেছে বলেই বিরোধী অনৈতিকরা বার বার শির ঝাড়া দিয়ে  দুলকিতালে চলছে।

ইসলামধর্ম বিরোধীর উচ্চারিত সেই জিহাদী বই ‘কুরআন’ থেকেই একটি আয়াত কোট করছি। “তোমাদের মধ্যে এমন একটি লোকদল হওয়া চাই যারা আহবান করবে কল্যাণের প্রতি, আর নির্দেশ দেবে ন্যায় পথের, আর নিষেধ করবে অন্যায় থেকে আর এরা নিজেরাই হচ্ছে সফলকাম” (সুরা আল ইমরানের ১০৩ আয়াত)। ঐশ^রিক গ্রন্থ ‘কুরআন’ একটি অবিস্মরণীয় ফরমূলা গ্রন্থ, এর একটি আয়াতই উদাহরণের জন্য যথেষ্ট। সেখানে প্রতিটি আয়াতই কোন না কোন ঘটনার আলোকে নাজেল হয়েছে। তাই অনেক আয়াতকে বুঝতে আগে ও পরের ঘটনাকে নাড়া দিলে এর যুক্তি উপযুক্ত ও স্পষ্ট হয়। আবার অনেক আয়াত পড়লে সহজেই বুঝা যায়, যার আগে পরে যাবার প্রয়োজন পড়ে না। এ কঠিন বাস্তবতার উদাহরণীয় বলেই এটি নাজেল হতে ২৩টি বছর সময় লাগে কারণ ক্রমান্বয়ে চলমান ঘটনার আলোকে এটি ক্রমে ক্রমে অবতীর্ণ হয়।

“সিরাতুল মোসতাকিম” মানে সহজ সরল ধর্ম। ঐ বিতর্কে বিরোধীর কথা ছিল ওটি সব ধর্ম থেকেই একটি জটিল ধর্ম।  নিজেদের অপরিণামদর্শীতার জন্য যেটুকু জটিলতা এর মাঝে ধর্মে এসে জট পাকিয়েছে তাকে সহজ সুন্দর করে উপস্থাপনা আমাদেরকেই করতে হবে। আয়ান হিরসী আলীরা খুব অল্পেই কুপোকাৎ হতে বাধ্য। কারণ তাদের হাতে কোন ঐশী গ্রন্থ নেই, কিছু অনভিজ্ঞ ফাঁকা বুলি ছাড়া। তারা শুধু ধর্মের সর্বনাশ করতেই কিছু আয়াত খুঁজে বেড়ায়, আগে পরের কঠিন অস্তিত্ব সংকটের বাস্তবতাকে এড়িয়ে গিয়ে যেখানে সেখানে সেটি কোট করে বাহবা অর্জন করতে চায়। আর মনে করে ধর্মের বিশাল গবেষনা তাদের হাতে। আমাদের হাতে এমন এক শক্তিশালী অস্ত্র, যা দিয়ে অতীতে ১০,০০০ সৈনিকের রক্তপাতহীন বিজয় এ গ্রন্থই দেখিয়েছে সেই সপ্তম শতাব্দীতে। সে বিজয় আজও ম্লান হয়নি, হবেওনা। এ বিজয় রোধবার শক্তি গুষ্ঠিবদ্ধ কোন শক্তির পক্ষেই সম্ভব নয়, সপ্তম শতাব্দীতে ধর্মের পূর্ণতার সময় থেকেই আবু জেহেল আবু লাহাবরা যে গুটিচাল চালিয়েছিল, সে একই চাল স্বদলের স্বগোত্রের স্বধর্মের হিরসী আলীরা চালিয়ে যাচ্ছেন। এতপরও মনে হয় তারা সেই শিকড়েই পড়ে আছেন আর ইসলাম এগিয়ে গেছে গোটা বিশে^র তৃণমূল পর্যায়ে। রাশিয়ার মত দেশে যেখানে ধর্ম ছিল নিষিদ্ধ, সেখানে মুসলিমরা চারদিকে বিজয় কেতন উড়িয়েছেন। মনে হচ্ছে নিষিদ্ধ দেশে এ ধর্ম আরো বেশী সক্রিয় হয়ে এগিয়ে চলে কারণ এসব ঘটনা অদেখা বিধাতার উপস্থিতিই সরব করে।

নাজমা মোস্তফা 

Tag Cloud

%d bloggers like this: