Articles published in this site are copyright protected.

না জ মা মো স্ত ফা

(ভাবছি আজ পুরানো কিছু কলাম সংযুক্ত করবো। যা প্রচারিত হয়েছে আজ থেকে ৯ বছর আগে)।

২০০১ সালের ২৬ জুন তারিখে ‘নিরাপত্তার ব্যর্থ বেষ্টনী’ নামের একটি কলামের কথা মনে পড়ছে। ওই দিন এ নামে আমার এ কলামটি ছেপেছিল দৈনিক ইনকিলাব। বিষয়টিতে এসেছিল ‘মৃত্যু রোধ করার কোনো কৌশল আজ অবধি আবিষ্কৃত হয়নি, তবে আকস্মিক মৃত্যু, দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু রোধকল্পে একটি সরকার গোটা জাতির জন্য অনেক ব্যবস্থাই করতে পারে, যদি সে সরকার জনগণের সরকার হয়ে থাকে। আর তখন সেই জনগণই হবে তার প্রধান নিরাপত্তার আশ্রয়।’ এক যুগ আগের খবর হলেও এটি বোঝা যায় অতীতেও এ সরকার যখনই দণ্ড হাতে পেয়েছে তখনই নিজের নিরাপত্তার চিন্তাই মগজে রেখেছে। সরকার তার নিরাপত্তার স্বার্থে সেদিনও অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে আইন তৈরি করে রেখেছিল। সবদিনই তার আচরণে এটিও লক্ষণীয়, অনাচার করেছে মনের সুখে তাই স্বভাব গতিতেই নিরাপত্তার বিষয়টি বারে বারে নাড়া তৈরি করছে। এর ধারাবাহিকতায় আজ ২০১৩ সালে আবার সেই পুরনো নাটকের ঝালাই চলছে। সরকারের চিন্তা আর কারও জন্য নয়, শুধু আপন পরিবারকে নিয়ে সবদিনই এক বড় দুশ্চিন্তা। 

উচিত ছিল বিধাতার কাছে কায়মনোবাক্যে সেটি চাওয়া, ওটি চাইতে পারলেই তিনি সবচাইতে বেশি নিরাপদ থাকতেন। তা না করে তিনি সমানেই গরিব একটি দেশের ওপর তার অপকর্মের সব দায় কৌশলে তুলে দিতে চান। এরা হচ্ছেন শেখ হাসিনা নিজে ও তার বোন রেহানা, তাদের সন্তান জয়, পুতুল, ববি টিউলিপ। এটি স্বাধীনতার সনদে বা ৭ মার্চের বক্তৃতাতে জাতির কোনো লিখিত বা অলিখিত শর্ত ছিল কি, যদিও তা বলা হচ্ছে না। যে জাতি প্রতাপী পিতারই তোয়াক্কা করল না, সে জাতি কেমন করে বাকি নাতিপুতিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে, আল্লাহই মালুম। এটি কি ৭ মার্চের ভাষণের মূল্য বাবত জমা অর্জন? নয়তো স্বাধীনতার যুদ্ধে পিতা, মাতা, পুত্রী, জামাই, ছেলেপেলে কেউ কি ছিল? বরং জানা যায় সবাই জামাই আদরে মিলিটারিদের স্যালুটের অলিখিত বা লিখিত(?) সন্ধির হেফাজতেই ছিল। আর যুদ্ধ পরবর্তী সবাই পরিবার শুদ্ধ দলবেঁধে দেশ উদ্ধারে হরিলুটের অংশে শরিক হন। সেদিন থেকে দলেবলে এরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা চেতনা করে পক্ষের শক্তি সাজে। এটি সত্য, সেদিন ওই পাক হানাদার বাহিনীর সময়ও তারা অন্য রকম এক নিরাপত্তায় ঘেরা ছিলেন। পুত্র জয়ের জন্ম সংক্রান্ত মিলিটারি নিয়ন্ত্রণে সব হেফাজতের খবরই জাতির জানা। একদল প্রহরারত বাহিনী সার্বক্ষণিক হেফাজতে নিয়োজিত ছিল। ওই হেফাজতটি এবারও তিনি আজীবন দলেবলে চাচ্ছেন। তার দৃষ্টিতে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী অসভ্য। এদের ধ্বংসই উনার অন্তরের কামনা, এটি ছিল তার মুখনিসৃত বাণী। বিডিআর বিদ্রোহে ওই বাণী বেশ বড়মাপেই ধ্বংস সফলতা এনেছে। প্রথম কিস্তি গেলার পর দ্বিতীয় কিস্তির প্রাপ্য ছিল মাত্র পনেরো কোটি টাকা, সেটি উদরস্থ করে হাসিনা এক সময় এরশাদের পুরো বিরোধী নেত্রী সাজেন। এসব হচ্ছে হাসিনার ল্যাং-মারা রাজনীতি। তাই এরশাদ হটানোর মূল নেত্রী সবদিনই খালেদা, আপসহীন নেত্রী আর উনি হচ্ছেন বহু পরে খালেদার পেছনে হাঁটা বিক্রি হওয়া ছলবাজ নেত্রী। শেষ মুহূর্তে এসে এরশাদ হটানোতে তিনি নামেমাত্র সই করা আন্দোলন আন্দোলন খেলার একজন। 

জানা যায়, ২০০৯ গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন পর্যালোচনা করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উচ্চ পর্যায়ের ফের বৈঠক হয় নভেম্বরের ২০১৩ সালে। উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ১৫ অক্টোবর জাতীয় সংসদে ‘জাতির পিতার পরিবার সদস্যদের নিরাপত্তা আইন’ প্রণয়ন করে। এ আইনে এরা সদস্যরা হলেন কন্যারা ও তাদের সন্তানাদি। আইন অনুযায়ী ১৯৮৬’র অধীনে সিকিউরিটি ফোর্স ভিআইপিদের জন্য যেরূপ নিরাপত্তা রয়েছে সেরূপ নিরাপত্তা বাংলাদেশ সরকার আজীবন জাতির পিতার পরিবারের সদস্যদের দিয়ে যাবে। এবং সেটি দিবে সবস্থানে। ধারণা হয় সেটি দেশে-বিদেশে জলে-স্থলে গহীন অরণ্যে সর্বত্র। এখানের প্রত্যেক সদস্যের জন্য নিরাপদ ও সুরক্ষিত আবাসনের ব্যবস্থা করবে এবং এ বিবেচনাতে প্রয়োজনীয় অন্যান্য সুবিধাও তাদের দেবে। ওদিকে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনী প্রচারকালে জয়ের ওপর হামলার আশঙ্কা রয়েছে বলে শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা রিপোর্ট পাঠায়। দেশের যে কোনো জায়গাতে তাকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেয়ার স্বার্থে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতিবেদন পাঠিয়েছে। যে দেশের গোয়েন্দারা বিডিআর বিদ্রোহের মতো এতবড় একটি ভূমিকম্পের কোনো ইশারাও আঁচ করতে পারে না, তারা কোন ভরসায় এসব অলৌকিক খবর সংগ্রহ করেন তাতে সচেতনের অতিরিক্ত সন্দেহ না হওয়ার কোনো অবকাশ নেই। 

বাংলাদেশে কি ঠেকে আছে জয়ের অভাবনীয় সম্ভাবনার নির্বাচনী প্রচারের জট-জটিলতাতে? তাকে কী কারণে এই গরিব দেশের ভাণ্ডার লুটের জন্য বারে বারে আমেরিকা থেকে ছুটে যেতে হচ্ছে? সে না গেলে বরং দেশ অনেক উপকৃত হয়, অনেক সাশ্রয় হয়। বলা হচ্ছে জীবনের শঙ্কার মাঝে জয়ের জীবন অন্যতম। বর্তমানের যা নিরাপত্তা আছে পরিস্থিতিগত কারণে এটি আরও জোরদার করা প্রয়োজন। সারা জাতি আজ তার দিকে চেয়ে আছে, এমন অবস্থানে প্রতিটি খুটিনাটি অবস্থানের নিরাপত্তার স্বার্থে ডিসি, এসপি, ও ইউএনওদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সবচেয়ে দুঃখের বিষয়, যারা সারা জাতিকে ত্রাসের মাঝে রেখেছে তারাই শুধু তাদের নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যস্ত অতীতে এবং আজও। শত শত হাজার হাজার মানুষের জীবন এখানে অনিরাপদ অবস্থানে আছে, সেখানে শুধু যাদের কারণে এত অস্থিতিশীল অবস্থা তাদেরই নিরাপত্তা চাই কেন? এর কি কোনো যুত্সই উত্তর কারও কাছে আছে? না থাকলে প্রত্যেকেরই উচিত সে উত্তর খুঁজে বের করা! 

তার নিরাপত্তার আরও বহু বেশি দরকার। পাঠকদের কিছু ইতিহাসের পেছনে নিয়ে যাচ্ছি। ১৯৯৪ সালে ২৩ সেপ্টেম্বর অনিশ্চয়তার পথে চলছে বাংলাদেশের রেলের অনিশ্চিত ট্রেন, পথে পথে থামিয়ে বিরোধী নেত্রী হাসিনার সভা হচ্ছে। প্রতিটি স্টেশনে এভাবে কম করেও ১ ঘণ্টা নিয়ে চলছে বক্তৃতার ট্রেন, পেছনের বগিতে আছেন বিরোধী নেত্রী ও তার লোকলস্কর। সঙ্গে এসেছে ডজন ডজন নিরাপত্তার জন্য পুলিশ সদস্য ও সাংবাদিকরা। রাত ঘনিয়ে এলে একই বক্তৃতা শুনে কাতর সাংবাদিকরা কিছু একঘেয়েমিতে ঝিমিয়ে পড়লে দলবাজের একজনের নির্দেশে কয় রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়। সঙ্গে সঙ্গে ওই গুলির আওয়াজ লক্ষ্য করে নেত্রী নির্দেশ দেন চারদিকে সাংবাদিকদের মাঝে খবর ছড়িয়ে দাও যে আমাকে হত্যা করার চেষ্টা হয়েছিল। একটু পর ট্রেন ঈশ্বরদিতে থামলে আওয়ামী নেতা আমীর হোসেন আমু মাইক দিয়ে প্রচার করেন যে জননেত্রীকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। পরের দিন ২৪ সেপ্টেম্বর এ খবর সব পত্রিকার শিরোনাম দখল করল। গুলির মূল নায়ক বন্ধুরা এসব নিয়ে হাসাহাসির এক পর্যায়ে এটিও স্থির হয়ে যায় যে এর ওপর হরতাল আসতে হবে ঠিক পরদিন। যার খেসারত দিতে একদিন হরতাল হয়। এসবের বিচার কি এ জাতি কোনোদিনও করবে না? তার এসব অপকর্মের অনেক শরিকজনরা নামে পরিচয়ে আজও সারাদেশ ঘিরে আছে। 

দিনে দিনে আরও উদ্বেগ সৃষ্টির চটকদার খবর আসছে। আজ ২৫ নভেম্বরের খবরে এবার জয় বলছেন, বর্তমানে এমন কোনো জেনারেল বাংলাদেশে নেই যে দেশ উদ্ধার করবেন। তাছাড়া যারা আছেন এরা এতই কেনা গোলাম যে এরা গোলামি ছাড়া কিছু জানে না। তার কথায় এটিও সুস্পষ্ট করে ব্যাখ্যা দেয়া হয় যে, তাদের লাশের ওপর দিয়ে যাওয়া ছাড়া শাসন ক্ষমতা অন্যেরা হাতে পাওয়ার আর কোনো উপায় খোলা নেই। বাংলাদেশ মুজিব পরিবারের কাছে কি বর্গা দেয়া হয়েছে? দেখা যাচ্ছে জয় আর ভূঁইফোঁড় রেহানা দু’জনই ভারতীয় হাইকমিশনে একের পর এক লাইন দিচ্ছেন। স্বাধীনতা পরবর্তী শুরুর দিন থেকেই এ পরিবার দেশের জন্য এক ভয়ানক সুনামি হয়ে দাঁড়িয়েছে। গোষ্ঠীশুদ্ধ জাতির ঘাড়ে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে, জাতিকে খুবলে খুবলে শেষ করতে চায়। তারপরও প্রকৃত বিচার না করে এদের নিরাপত্তাই বা কেন দিতে হবে? তাহলে আইন করে কি মীর জাফরের জন্য ইতিহাসের ঘসেটি বেগমদের জন্যও আজ নতুন কিছু করা হবে? উত্ফুল্ল পঙ্কজ সরেনের সঙ্গে জয় গোপন বৈঠক করছেন। বিষয়বস্তু জাতির অজানা। সরেন বলেন, পরিস্থিতি অবগত করতে জয় এসেছিলেন। যেন এরা গোটা দেশকে কয়েক প্রস্ত কাঁটাতারের খাঁচায় পুরে ফেলেছে। সব দ্বার রুদ্ধ করে তারা রেখেছেন। জয় আরও বলেন, গণভবনও যারা পাহারা দিচ্ছে তারাও তার মায়ের আজ্ঞাবহ গোলাম। বলছেন একমাত্র অলৌকিক উপায় ছাড়া কোনো রাস্তা খোলা নেই। বিডিআর বিদ্রোহের দলবাঁধা সব কর্মকর্তার অন্তর্ধানের সব জটিল কথা এবার পানিজলের মতো স্পষ্ট হচ্ছে। এসব হচ্ছে বিগত পাঁচ বছরের ভূমিকম্পের সাম্প্রতিক সংবাদ। তাদের ভাষাতে অলৌকিকের রাস্তাটি মাত্র খোলা আছে। সব যুগেই অলৌকিকের নাড়াতেই ফেরাউনরা গদি ছেড়ে পালায়, এটি ঐতিহাসিক সত্য কথা। ইলিয়াস আলীর দেশ সিলেটে সত্যের তেজে বলিয়ান ইয়েমেন থেকে আগত ফকির শাহজালালের হুমকিতে গৌড় গোবিন্দের রাজার ধ্বংস ও পলায়ন ইতিহাসের জ্বলজ্যান্ত বাস্তব উদাহরণ। 
গাজীপুরে শ্রমিকদের আগুনে পুড়ল গার্মেস্ট কারখানা। খবরটি দেখে মন বিচলিত হয়। এসব কারা করছে? এমন একটি সময় এটি হচ্ছে যখন কারখানা বন্ধ ছিল। জানা যাচ্ছে বহিরাগতরা এসে আগুন দিয়েছে প্রতিটি ফ্লোরে ফ্লোরে, দেখে মনে হয় এটি পরিকল্পিত অগ্নিসংযোজন। এটি এমনভাবে করা হয়েছে, যাতে ক্ষতিগ্রস্ত করার দিকেই কর্মকর্তাদের নজর বেশি ছিল। রাত ১২টার পরে কারখানার গেট ভেঙে একদল বহিরাগত এ কাজটি করে। আপনাদের যাদের মগজ আছে তারা এটি গুনে দেখেন, অঙ্ক করেন, এসব কে বা কারা করছে, এটি এদেশের মানুষ করেনি। প্রতিবেশী দেশের ইন্ধনে এসব হচ্ছে বলেই ধারণা হয়। এদেশ থেকে এ ব্যবসা ধ্বংস করতে এসব করা হচ্ছে। আপনারা সারা জাতি এক হোন আর নিজেদের নিরাপত্তা নিজেরাই নির্ধারণ করেন। আর দেশের প্রতিটি ছলবাজ শয়তানকে দেশ থেকে বিতাড়িত করুন। যারা আপনাদের জীবন অনিরাপদ করে তুলেছে, ওদের নিরাপত্তার কথা না ভেবে নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। এটি পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে, এটি যে কোনো বোকায়ও বুঝে। জানা যায়, এখানে কোনো বড় রকমের শ্রমিক অসন্তোষ বা বেতনভাতার অসন্তোষও ছিল না। এটি ওই একই বিডিআরের আদলে সাজানো হয়েছে। এ নাশকতায় ভেঙে পড়ে হতভাগ্য দরিদ্র দেশের ১৬ হাজার শ্রমিকের ভাগ্য। কমপক্ষে হাজার-কোটি টাকার, আবার কেউ বলছে শত-কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে আগুনে পুড়ে। পুলিশ বলছে আগুন ধরিয়েছে বহিরাগত লোকজন। ওই সময় কারখানা ছুটি ছিল। শ’ শ’ বহিরাগত লোক ঢুকে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তারা কি নাকে তেল দিয়ে ঘুমান? এসব খবর আঁচ না করে চোখের সামনে ঘটতে দেখেও, দশ-বিশ গুণ্ডাকে ধরতে না পেরেও খালি পদ ধরে আছেন! অন্ধকার মাপায় দক্ষ, এদের কি জয় আর তার পরিবারের চিন্তা ছাড়া মাথায় আর কোনো সেক্টরই কাজ করে না? এই অপকর্মী সরকারের সব পাট খুলে ধরার দায়িত্ব জাতির প্রতিটি জনতার। যারা এ দায়িত্বে অবহেলা করবেন তারাই জাতির চিরস্থায়ী বেইমান হয়ে চিহ্নিত হয়ে থাকবেন আর শীর্ষ গোয়েন্দারা সেখানের শীর্ষে অবস্থান করবেন। 

চারপাশের জটিলতায় মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে যুদ্ধে লিড দেয়া একজন মেজর জলিলের কটি কথা আনছি। ‘ওরা যশোর সেনানিবাসের প্রত্যেকটি অফিস এবং কোয়ার্টার তন্ন তন্ন করে লুট করেছে। বাথরুমের মিরর এবং অন্যান্য ফিটিংসগুলো পর্যন্ত সেই লুটতরাজ থেকে রেহাই পায়নি। রেহাই পায়নি নিরীহ পথযাত্রীরা। কথিত মিত্র বাহিনীর এই ধরনের আচরণ জনগণকে ভীত-সন্ত্রস্ত করে তুলেছিল।… আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব এবং ভারতীয় চক্রের মধ্যকার ষড়যন্ত্র সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের জানারও কথা ছিল না। তারা হানাদার বাহিনীকে অত্যাচার করতে দেখেছে, অত্যাচারিত হয়েছে বলে আত্মরক্ষার্থে রুখে দাঁড়াতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধে শামিল হয়ে পড়েছে। যুদ্ধ-উত্তরকালে আওয়ামী লীগ চরম সঙ্কীর্ণতার পরিচয় দেয় এবং মুক্তিযুদ্ধের জাতীয় রূপকে দলীয় রূপ প্রদানের জন্য বিভিন্নমুখী ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নেয়।…’৭২-এ আওয়ামী লীগের এমন কোনো বৈধ অধিকার ছিল না যাতে করে তারা দেশ ও জাতির ওপর একটি মনগড়া সংবিধান আরোপ করতে পারে। তবুও তারা তা জবরদস্তি করেছে। দেশের জনগণের চিত্কার প্রতিবাদ কোনো কাজেই আসেনি। এভাবেই যুদ্ধ-উত্তর বিধ্বস্ত বাংলাদেশের কোটি কোটি বুভুক্ষু মানুষের জন্য অন্নবস্ত্রের আগেই রাষ্ট্রীয় মূলনীতি এসে মাথায় চেপে বসে। এই ৪ মূলনীতি আরোপ করার মধ্য দিয়ে দিল্লির কর্তারা তাদের মূল লক্ষ্যই স্থির রেখেছে কেবল।...দেশের জনগণের কোনোরূপ তোয়াক্কা না করেই রাষ্ট্রীয় মূলনীতির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব জনগণের ওপর জবরদস্তিভাবেই চাপিয়ে দিল। একটি রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা অবুঝের মতো কেবল ৪টি স্তম্ভই ধার করলাম, নিরাপদ একটি বাসগৃহ তৈরি করার প্রস্তুতি নিলাম না। দেশের কোটি কোটি নির্যাতিত মানুষ এবং তৌহিদি জনগণ আজ সেই নিরাপদ একটি বাসগৃহই কামনা করে, বিদেশি প্রভুদের কাছ থেকে পাওয়া স্তম্ভবিশিষ্ট ইমারত নয়। সুতরাং সেই বঞ্চনাকারীদের কবল থেকে বঞ্চিতদের ন্যায্য পাওনা আদায় করার লক্ষ্যে আর এ্কটি প্রকৃত মুক্তিযুদ্ধের প্রয়োজন কি এখনও রয়ে যায় নি?’ প্রশ্নটি করে গেছেন একজন মুক্তিযোদ্ধা। আজ আমাদের মনেও হাজারো প্রশ্ন। আমরাও এসব প্রশ্নের উত্তর চাই। গোটা জাতির নিরাপত্তা চাই, প্রতিটি মৃত্যুর প্রকৃত ফয়সালা চাই। আর যাদের জন্য গোটা জাতি আজ হুমকির মুখে তাদের শুধু নিরাপত্তা নয়, সঠিক বিচারও চাই। যারা উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ের খেলা খেলে এতকাল পার পেয়েছেন এবার তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দেখতে চাই। 
রচনাকাল ২৯ নভেম্বর, ২০১৩

বি দ্র: আমার দেশ অনলাইন এ কলামটি ২০১৩ তে উপরের নির্দেশিত তারিখে ছাপে।রচনাকাল ২৯ নভেম্বর, ২০১৩

Tag Cloud

%d bloggers like this: