পাঠ্যবই জটিলতা ষড়যন্ত্রের সাথে কারা জড়িত আশা করছি খুব সহজেই তারা ধরা পড়বে ও শাস্তি পাবে। ধরা খাওয়ার পরও কিছু ষড়যন্ত্রীরা আজ উচ্চকন্ঠ হয়েছে যাতে জাতিকে কৌশলের সূতা নাতা দিয়ে অষ্টেপৃষ্ঠে বাধা যায়। ২০১৭ সালে পাঠ্যবইএর তুমুল লড়াই বাংলাদেশে শুরু হয়েছে, এই সুবাদে মুক্তমনের নামে অজয় রায়রা খুব হাত দাগিয়ে চলেছেন। প্রথমে শুনে আমিও কিছু বিচলিত হই, চমকাই। অনেক দিন থেকে এ লড়াই জানাই ছিল, তারপরও চমকানোতে বিষয়টার উপর একটু বাড়তি আলোকপাত করাই জরুরী মনে করলাম। মাথা ঠান্ডা করে ভালো করে পিছনে তাকাই। মুক্তমন নামধারী এসব অজয় রায় মেধাবীরা দেশটির ও জনগণের পোস্ট মর্টেম করে ছাড়বেন মনে হচ্ছে। তার কথা শুনে মনে হবে হেফাজতিরা সব অপকর্মের মূল। কারো দোষ থাকতে পারে সেটি স্পষ্ট করে না দেখিয়ে মিথ্যে করে অপবাদ ছড়ালেই বাহাদুরি কেনা যায় না এবং এভাবে মুক্তমনা হওয়াও যায় না। বরং এতে সব ছলবাজিও স্পষ্ট হবার সম্ভাবনা থেকে যায় । বাংলাদেশ একটি ৯০%-৯৫% মুসলিম দেশ। সেখানে এই ৯৫% মানুষের বিশ^াসের কবর রচনা করে কেন পাঠ্যবই সাজাতে হবে? অতীতে কি কারণে মুসলিমরা লেখাপড়াতে পিছিয়ে পড়েছিল সেটি কি বাংলাদেশের মুসলিমরা ভেবে দেখবে না? ভারতে আখলাকদের মূল্য কানা কড়িতে বিকায়, গরুর মাংসও খেতে পারে না ধর্মের দোহাই দিয়ে, ওটি খেলে তাদের জবাই হতে হয়।
তৎকালীন বৃটিশ জেনারেল শ্লীমান মোগল যুগের উচ্চ মানের শিক্ষার প্রশংসা করে বলেছেন, ভারতীয় মুসলমানদের মধ্যে শিক্ষার যেরুপ ব্যাপক প্রসার হয়েছে পৃথিবীর খুব কম সম্প্রদায়ের মধ্যেই সেরুপ হয়েছে। উইলিয়াম হান্টারও এ কথাটি স্বীকার করেছেন যে, সেই যুগে ভারতে প্রচলিত শিক্ষা অন্যান্য শিক্ষা পদ্ধতি হতে বহুলাংশে উৎকৃষ্টতর ছিল। উনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে মুসলিমদের শিক্ষা ব্যবস্থার অবনতি হয়। রাজ্যহারা মুসলিমদের প্রতি বৃটিশের ছিল একচোখা নীতি। মুসলিমরা সাধারণ শিক্ষার সাথে ধর্মীয় শিক্ষা অত্যাবশ্যক মনে করতো। তখন ছাত্রদেরে প্রতিদিন হাটু গেড়ে নত মন্তকে স্বরস্বতী বন্দনা আবৃত্তি করতে হতো। পত্র লেখা, মনসামঙ্গল, হিন্দু ধর্ম ও উপকথাসমৃদ্ধ দিয়ে সাজানো ছিল। যার জন্য মুসলিমরা পাঠশালাগুলির এই শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি আকৃষ্টতা হারায়। এটিই প্রধানত মুসলিমদের পড়াশুনাতে পিছিয়ে পড়ার প্রধান কারণ। তাদের কাছে তাদের ঈমান রক্ষা করাই ছিল জীবন ধারণের মতই মূল্যবান। যারা আজীবন যুক্তির সাথে উঠাবসা করেছে, তারা এসব অতিভৌতিক মূর্তি নির্ভর জীবনের মাঝে খেই হারিয়ে ফেলেছিল। নজরুল সবদিনই ভারতের পাঠ্যবইতে উপেক্ষিত। সেদিন দেখলাম তার চুরুলিয়ার অবহেলার চিত্রটি একটি কলামে ভিডিওটি দেই। তড়িঘড়ি কেউ ওটি মূল সূত্র থেকে মুছেও দেয়। কারণ মুসলিম নির্যাতনের খুশবু বের হয়ে যাচ্ছে। অজয় রায়দের মুখে মুসলিম জনতার বিপক্ষের ওকালতী অনেকটাই স্পষ্ট। বাংলাদেশের ইসলাম মানসের অনুভূতিকে তারা মনে করে হেফাজতের অনুভূতি।
নতুন সংযোজন: অনেক দিন থেকেই মুক্তমতের দাবীদার বর্ষিয়ান এ শিক্ষক দেশবাসীকে নির্দেশ দিচ্ছেন। আজ ১২ এপ্রিল ২০১৭, আবার তিনি সরব হয়েছেন, প্রথম আলোয়। তরুণকে ডাকছেন প্রয়োজনে মূর্তি সরালে তরুণরা যেন ময়দানে ঝাপিয়ে পড়ে। কথায় কথায় বৃহত্তর মুসলিম জনগোষ্ঠীর কোন চাওয়াকে তিনি হেফাজতের চাওয়া বলে তীর্যক মন্তব্য করেন। সমস্ত ভারত জুড়ে ভারতের হিন্দুদের সীমাহীন বিতর্কীত কর্মকান্ড দেখেও কয়জন মুসলিম মুখিয়ে উঠেন কিন্তু তিনি মুক্তমতের নাম নিয়ে একটি নীতি ধর্মের মানুষকে এভাবে আক্রমণ করে নিজের প্রকৃত পরিচিতি স্পষ্ট করেন। ধর্মের উপর তার আক্রমণের সীমা, প্রথম লাইনে বলেন ইসলাম শান্তির ধর্ম, বলেই তিনি জুড়ে দেন এদের কিছু সংগঠন নারীকে শুধু রান্না ঘরে আর রাতে পুরুষের সঙ্গি করতে চায়। ইসলাম কখনোই এসব অনাচারে নেই। কয়টি সংগঠন এর কথা বলে মূল ধর্মকে কটাক্ষ করে তিনি কি বলতে চাচ্ছেন? তিনি কি প্রকারান্তরে এ ধর্মের শিকড়ে বিষ ঢেলে দিচ্ছেন না? এর নাম কি মুক্তমনা? তাদের আধা রাখি আধা ঢাকি বেশ থেকে স্পষ্ট হওয়া দরকার। তাদের এটি স্পষ্ট করা দরকার তারা বাংলাদেশ থেকে মুসলিম নির্মুল চান, ইসলাম ধর্মের বিলুপ্তি চান। হাজার অপকর্মে অপসংস্কৃতিতে দেশ ডুবছে সেদিকে তাদের খেয়াল নেই। এরা যদি প্রকৃতই মুক্ত মনের হতেন তবে জাতির এত বিপন্ন দশাতে তারা কয়টি সত্য কথা বলেছেন, বা জাতিকে সুপথ দেখাতে পারে। জাতি বিভক্তির খেলা ছাড়া তাদের হাতে দ্বিতীয় কোন কার্ড নেই।
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে পাঠ্যবইয়ে পরিবর্তনসমূহ দেখে অজয় রায়রা ক্ষুব্ধ। স্মরণ রাখার বিষয়, হাতে নাতে ধরা পড়ে কিছুটা বেকায়দায় পড়ে সরকার এ পরিবর্তন করে। অতীতে কোন সরকারের সময়েই এসব দেশ বিধ্বংসী বিতর্ক উঠে নাই, কেন? পাকিস্তানের সময়ও এসব ঘটনা ঘটে নাই, এমন কি নতুন স্বাধীন দেশেও নয়। এসব সত্য তারা ঐ পাঠক্রমের পক্ষশক্তিও বলতে বাধ্য হচ্ছেন। দেখা গেছে অজয় রায়রা ঐ পক্ষে দাঁড়িয়েছেন, তাদের যুক্তিতে মনে হচ্ছে ছাগলের গাছে চড়াটাই শোভনীয়। আজ কেন এমন ভুতের আগমন ঘটলো? শুধু পরিবর্তন নয়, ঐ সব কালপ্রিটকে খুঁজে খুঁজে জবাবদিহি মূলক শাস্তিই উচিত ছিল একমাত্র জমা পাওনা। বেশ কটি বছর থেকে এসব চলছে, অতপর ২০১৭এ তা পুনঃমুদ্রন করে ফিরিয়ে আনা হয়। দেখা যায় সমাজের এগিয়ে চলা নামধারী কিছু জনরা মুক্তবুদ্ধির নামে, ধর্ম নিরপেক্ষতার নামে মুসলিমকে আবর্জনা গেলাতে চাচ্ছে। ৫% হিন্দুর জন্য ৯৫% মুসলিমকে তারা চরম অবজ্ঞা দেখিয়েছে। নীচে কি সরানো হয়েছে এবং কি ফেরত এসেছে তার একটু ছোঁয়া আনছি।
ক্লাস ওয়ানে ওড়না বিতর্ক তো রয়েই গেল। ওড়না দেয়াতে নাকি শিশু মেয়ের উপর অবিচার হয়েছে। দেখা গেছে বিগত সময়ে ক্লাস টুএর পাঠে শেষ নবীর “সবাই মিলে করি কাজ” ক্লাস থ্রি এর খলিফা আবু বকর, ক্লাস ফোর এর খলিফা হযরত ওমরের সংক্ষীপ্ত জীবনী বাদ দেয়া হয়। ক্লাস ফাইভে হুমায়ুন আজাদের একটি বিতর্কীত কবিতার নাম “বই” যাতে এটি স্পষ্ট যে মূল ইসলাম ধর্ম গ্রন্থকে খুব কৌশলে ব্যঙ্গ করে উদ্দেশ্য মূলক ভাবে নাস্তিক ধ্বজাধারী এ লেখক লিখেছিলেন; তা কেন কি উদ্দেশ্যে বাচ্চাদের পাঠ্য সূচিতে ঢোকানো হলো এটি কি ভাবার বিষয় নয়? একদম কচি একদল বাচ্চার সাথে পাঠ রচনাকারী পরিচালকরা কি পরিমান ষড়যন্ত্র করেছেন সেটি মাথায় রাখবেন, প্লিজ! যখন থেকে তারা চিন্তা করতে শিখবে ক্লাস ফাইভে এ ডোজটি রেডি করা হয়, যাতে তারা গিলে। শহীদ তিতুমীরের জীবন চরিত, তার বৃটিশ বিরোধী কৃতিত্বের কথা, আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর জীবন চরিত এসব সরিয়ে ঢোকানো হয় “হিমালয়ের শীর্ষে বাংলাদেশের পতাকা” উল্লেখ্য, মুসা ইব্রাহিম নামের একজন এভারেষ্ট বিজয়ী দাবিদার যাকে নেপাল সরকার তার এ কৃতিত্বকে অস্বীকার করে। অতপর বিতর্কীত জিনিস বদলে আনা হয় কবি কাদের নেওয়াজের লেখা বাদশাহ আলমগীরের “শিক্ষা গুরুর মর্যাদা, বিদায় হজ্জ্ব ও বৃটিশ বিরোধী যোদ্ধা বীর তীতুমীরের জীবন কাহিনী। ক্লাস সিক্সএ বাংলা চারুপাঠে একটি গল্প “লাল গরুটা” যেখানে সমালোচকরা বলছেন গোমাতার প্রতি ভক্তিই গল্পের মূল উদ্দেশ্য। মুসলিমদেরে যে গরু জবাইএরও হুমকি দিচ্ছে সংখ্যালঘুরা শুধু বাংলাদেশই নয়, আমেরিকাতেও, সেখানে এসব সুক্ষ্ম কারচুপির নিদর্শন নয় বলার সুযোগ কম। এর বদলে পুনরায় ফেরত আনা হয় “সততার পুরষ্কার” নামের ঘটনাটি। ভারতের রাচী ভ্রমণ বদলে “মিশরের নীলনদ আর পিরামিডের দেশ” পাঠ্যটি ফিরিয়ে আনা হয়। ক্লাস সেভেনে দূর্গা দেবীর প্রশংসায় রচিত “বাংলাদেশের হৃদয়” নামের কবিতা বদলে রবীন্দ্রনাথেরই আরেকটি কবিতা “নতুন দেশ” নেয়া হয়েছে। সেভেনে আবার শেষ নবীর সংক্ষিপ্ত জীবনী “মরু ভাষ্কর” ফিরিয়ে আনা হয়েছে। ক্লাস এইটে দুটি কবিতা “প্রার্থণা ও বাবরের মহত্ত্ব” যা বাদ দেয়া হয়েছিল তা ফিরিয়ে আনা হয়। সাহিত্যিক কায়কোবাদের লেখা প্রার্থণা কবিতাটি আল্লাহর প্রশংসা ভক্তির এক অনুপম উদাহরণ, তাই এটি সরিয়ে প্রবেশ করা হয় বাউল লালনের “মানবধর্ম” কবিতা। প্রকারান্তরে এসব হচ্ছে নাস্তিক্যবাদী শিক্ষার নামে ইসলাম ধ্বংস খেলা। বাংলাদেশে গোটা শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে মোগলরা বাতিল কেন ? কারণ হতে পারে মোদির ইচ্ছেতে তাই হচ্ছে ভারতে। বাংলাদেশে স্থানে স্থানে বসে আছে ভারতের দালালরা। সবদিন ভারতে বেশির ভাগই বিৃকত মুসলিম ইতিহাস পড়ানো হয়েছে। যারা এর উপর সঠিক কাজ করেছেন তাদের কাজকে আজীবন বাজেয়াপ্ত করে রাখা হয়। যদিও অনুসন্ধিৎসুরা জানেন এসব কত সঠিক। মোগল বাদশাহদের শহর ও রাস্তা করা ঐতিহাসিক দাগগুলোও খুব চতুরতার সাথে ভারত সরকার মুছে ফেলছে মুসলিম বিদ্বেষের কারণে। বাংলাদেশ নামের ৯৫% মুসলিম দেশটিতে চলছে এভাবে ভারতীয়করণ। দেখা গেছে যেখানে আগে ক্লাস এইটে ৩২টি পাঠ ছিল সেখানে এখন ১০টি কমে ২২টিতে এসে ঠেকেছে। অনেকেই অভিযোগ করছেন যেন তেন প্রকারে এসব বদলে দেয়া হয়েছে। কবি সগিরের নবম দশমের “বন্দনা” কবিতায় মা বাবার প্রতি শ্রদ্ধা সহ বিধাতার প্রতি আনুগত্য ও নৈতিক শিক্ষার উপাদানটি সরিয়ে আনা হয় “সুখের লাগিয়া” মধ্যযুগীয় বৈষ্ণব পদাবলী। এভাবে বাদ দেয়া হয় আল্লাহর নামে নিবেদিত মধ্যযুগের মুসলিম কবি আলাউলের “হামদ” কবিতাটি। অতপরঃ ক্লাস নাইন ক্লাস টেনে মঙ্গলকাব্যের অন্তর্ভুক্ত রাধা কৃষ্ণের লীলাকীর্তন (মামা ভাগনীর প্রেমলীলা) “সুখের লাগিয়া” বিতর্কীত লেখাটির বদলে শাহ মুহাম্মদ সগীরের “বন্দনা” কবিতাটি নেয়া হয়েছে। ভারতচন্দ্রের লেখা দেবী অন্নপূর্ণার কাছে প্রার্থণা করে লেখা “আমার সন্তান” এর বদলে ফিরিয়ে আনা হয়েছে মহাকবি আলাউলের “হামদ” নামক কবিতাটি। লালনের একটি বিতর্কীত কবিতা “সময় গেলে সাধন হবে না” যেটি ইত্যবসরে লালন গবেষকরা যা আবিষ্কার করেছেন তা সব সচেতনের জন্যই আতঙ্কজনক বিবেচিত হবে। সঙ্গত কারণেই এটি বাদ দিয়ে কবি আব্দুল হাকিমের বঙ্গবানী কবিতাটি নেয়া হয়। রঙ্গলাল বন্দোপাধ্যায়ের ইসলাম বিদ্বেষী কবিতা “স্বাধীনতা” বদলে আনা হয়েছে কবি গোলাম মোস্তফার “জীবন বিনিময়” কবিতাটি। অখন্ড ভারত গড়ার স্বপ নিয়ে লেখা সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের “সাকোটা দুলছে” বদলে কাজী নজরুল ইসলামের “উমর ফারুক” কবিতাটি নেয়া হয়েছে। ভারতের ভ্রমনকাহিনী “পালামৌ” বদলে বঙ্কিমের “ফুলের বিবাহ” গল্প নেয়া হয়েছে।
Bangla New Talk-show ” নিলুফার মনির সাথে সুভাষ সিংহের তুমুল হেফাজত বিতর্ক”
যেখানে ওড়না শিখলেই শিশু মেয়েরা অত্যাচারিত হবে, আর যখন শিক্ষক হুমায়ুন আজাদ শেখাবে মদ খাও, নেশা করো, ধর্মকে অবজ্ঞা করো, কোন প্রথা মানবে না, সংসার বিয়ের কোন মূল্যায়ন করবে না। তিনি কিন্তু এসবই করেছেন কিন্তু সমাজকে ধ্বসিয়ে দিতে কিছু বাকী রাখেন নাই। এমন কি এখানে মুসলিমদের যে সব নীতি নৈতিকতার বিষয় আলোচিত হয়েছে এসব থেকে হিন্দুরা কি কিছুই শিখছে না? নীতির উপর পাঠ রচিত হলে যে কোন ধর্মধারীই তা থেকে ইতিবাচক অর্জন জমা করতে সক্ষম। রাধা কৃষ্ণের লীলার মাঝে যদি নীতি নৈতিকতা থাকতো তবে ওটি রাখতে কারো আপত্তি হবার কথা নয়। তারা ছাত্রছাত্রীরা এখান থেকেই মানুষ হবার প্রকৃত সবক আহরণ করতে সক্ষম। ধর্মের নামে নষ্ট প্রেমলীলা, নিজ দেশের ধ্বংস ডেকে ভিন দেশের স্বপ্নকে বাস্তবায়নে পাঠ সাজানো, মিথ্যা এভারেস্ট বিজয়ের মিথ্যা শিক্ষা, ছাত্র ছাত্রীকে চরিত্র ধ্বংসের সব হাতেখড়িতে কেন উদবুদ্ধ করা, তাও আবার নাস্তিক শিক্ষক দ্বারা! যারা সারা জীবন ইসলাম ধর্মের উপর কুৎসা রচনা করেই ক্ষান্ত থাকে নাই, তার দৃষ্টিতে ধর্ম মানুষের অজ্ঞানতার আধার, সুপরিকল্পিত মিথ্যাচার। তার ভাষায় পঞ্চম শ্রেণীর জ্ঞানও ধর্ম দিতে পারে না। ধর্মে অবিশ^াসী, পরকালে অবিশ^াসী, পরিবার প্রথাতে অবিশ^াসী ধর্মকে তিনি সর্ব নিকৃষ্ট বলে দেখিয়েছেন, তার লেখাতে নেশা মদকে উৎসাহ দিয়ে গেছেন। জীবনকে উচ্ছন্নে নিয়ে যেতে, নীতি নৈতিকতাকে উপড়ে ফেলে দিতে এমন কোন কাজ নেই যাতে তিনি না উৎসাহ দিয়েছেন। হুমায়ুন আজাদের সমাদর পাবার মূল কারণ তিনি ইসলাম বিদ্বেষী। তার রচিত বই কবিতার কয়টি লাইন যে কোন সচেতনের মনেই কষ্ট বাড়িয়ে দিবে। হুমায়ুন আজাদের আজীবনের সাধনাই ছিল ঐ ঐশী গ্রন্থের বিরুদ্ধে, এটি নিশ্চয় যারা তার পাঠ পড়েছেন তারা জানেন। এরকম একজন মানুষ কবি কি বলতে চাচ্ছে এ কবিতাতে, পাঠক দেখুন –
“যে বই তোমায় দেখায় ভয়,
সেগুলো কোন বই-ই নয়
সে বই তুমি পড়বে না।
যে বই তোমায় অন্ধ করে
যে বই তোমায় বন্ধ করে
সে বই তুমি ধরবে না”
উপরের এ কবিতাটি ওড়না পড়ার কষ্ট থেকে কি ভয়ঙ্কর নয়? শিশুকে শেখানো হচ্ছে কুরআন কোন বই-ই নয়। ও বই পড়লে তুমি নষ্ট হবে, অন্ধ হবে, ওর ধারে কাছেও যাবে না। বিদ্যার কি বাহারী নমুনা! তো স্কুলে যাওয়ারই দরকার কি? মদের পাট্টাতে পাঠিয়ে দিলেই হয়, ভালো শিক্ষা হবে! হিরোইন ফেনসিডিলের প্রসার হবে, প্রতিবেশী দেশের আয় রোজগার বাড়বে। এখানের উপরের প্রায় প্রতিটি গল্প কবিতার সাথে আমরা নিজেরাও পরিচিত, এসব আমরা নিজেরাও পড়েছি। আর আমাদের হিন্দু ভাই বোনরাও এ থেকে অনেক নীতি নৈতিকতা শিক্ষা লাভ করেছেন যার সাক্ষী আমরা নিজেরাই। যা তাদের শিক্ষা ব্যবস্থাতে অনুপস্থিত বলেই আজও মুসলিমরা এসব মিথ্যাকে কখনোই গ্রহণ করতে পারে না। হিন্দুরা বলুক যে এসব শিক্ষালাভ করে তাদের বাচ্চাকাচ্চারা উচ্ছন্নে গিয়েছে, যাচ্ছে এবং যাবে। তারা প্রকারান্তরে ১০০% মুসলিমকে হিন্দুত্বের মূর্তি পূজাতে দাখিল করতে শপথ নিয়েছে। স্কুল কলেজে কখনোই ঈদ রমজান পালন হয় না, কিন্তু স্বরস্বতি পূজা না হলে নয়। সারা দেশে ২৯,০০০ / ৩০,০০০ মূর্তি গড়ে জাতির সামনে কি সুদিন আসছে, পরিবেশ ধ্বংস ছাড়া। এসব বিষয়ে সচেতন বিবেচক হিন্দুকে বিধর্মীকেও জেগে উঠতে হবে। এই একবিংশ শতকেও যদি মানুষ না জাগে আর কত যুগ মানুষকে অন্ধকারে হুমড়ি খেয়ে পড়ে থাকতে হবে। সারা দেশে যেভাবে হিন্দুত্ববাদীরা ও ধর্মনিরপেক্ষবাদীরা হামলে পড়ছে মনে ভয় হচ্ছে এসব কি প্রকৃতই তাদের ধ্বসের লক্ষণ। বলা হয় বাতি নিভে যাবার আগে ধ্বপ করে জ¦লে উঠে? ওটি কি ওরকম কিছু! বস্তুত নির্দ্ধিধায় বলা যায় এ পাঠ্য সূচি রচিত হয়েছিল দেশটিকে বিকৃত যৌনাচার ও হিন্দুত্ববাদের এক উৎকৃষ্ঠ লালনাগার হিসাবে গড়ে তুলার জন্য। এর মাঝে কোন ভুল নেই, যে বা যারা এসব করেছে তারা যে কত গভীর ষড়যন্ত্রের উপর ভর করে এসব করেছে তার সন্ধানে প্রতিটি সচেতনকে সে হিন্দু হোক বা মুসলিম হোক অতন্দ্র প্রহরায় বাড়তি সচেতন থাকতে হবে, এর কোন বিকল্প নেই।
“তোমরাই হচ্ছো শ্রেষ্ঠ উম্মত, তোমাদের খাড়া করা হয়েছে সমগ্র মানব জাতির জন্য। এ জন্য যে, তোমরা প্রতিষ্ঠা করবে ন্যায়ের এবং নির্মূল করবে অন্যায়ের এবং ঈমান আনবে আল্লাহর উপর।” –(সুরা আল ইমরান, আয়াত ১১০)।
নাজমা মোস্তফা
মার্চের ৬ তারিখ, ২০১৭।