মিডিয়াতে বলা হচ্ছে গুলশান হামলা ঘটায় নিঁখোজ হওয়া ছাত্ররা জঙ্গি হয়ে এটি করে। এবার তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব বিষয়ের বক্তা জাকের নায়েক ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট, যার পিস টিভির দর্শক ২০ কোটি, তাকেও খুব কৌশলে জঙ্গি সাজানো হচ্ছে, যুক্তি হচ্ছে কিছু জঙ্গিরা তার ভক্ত ছিল। পরোক্ষে তার জনপ্রিয়তা রুখতেই নিষিদ্ধের দাবী তুলেছে ভারতের কিছু লোক। বাংলাদেশের হামলাতে নাম আসছে আওয়ামী পরিবারের ছেলেরা এতে জড়িত। তারমানে সে হিসাবে সব আওয়ামীকে ময়দান থেকে নিষিদ্ধ ঘোষনা করা কি যুক্তযুক্ত হবে? ২০ কোটি দর্শকের মাঝে তার ভক্তের সংখ্যা মোটেও কম নয়। ভারত মুসলিমদের ইতিহাসকে নষ্টদের ইতিহাস বলে মিথ্যা ইতিহাস সাজিয়ে যুগে যুগে সত্য ইতিহাস চেপে রেখেছে। তাই নষ্ট ইতিহাসে মুখ থুবড়ে আছে মুসলিমদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। চাপা দিয়ে রেখেছে গোলাম আহমাদ মোর্তজার সত্যনিষ্ট বই, প্রকাশ হতে দেয়নি চেপে রাখা ইতিহাস, বাজেয়াপ্ত ইতিহাস ও ইতিহাসের ইতিহাস পর পর এ তিনটি বই লেখকের কঠিন কষ্টের মাঝে গড়ে উঠা মুসলিম যুগের অপার বিস্ময়কর গবেষনামূলক ইতিহাস। ভারতীয় সংকীর্ণমনা বর্ণবাদী হিন্দুরা শুরু থেকেই মুসলিমদেরে চিরদিন নির্যাতন করার স্বপ্নেই এসব করে যাচ্ছে। ভারতের সাধ্বী প্রাচী, বিজেপির মুসলিম নিধনের স্বপ্নে দেশ ছাড়া করার হুমকি যারা দিচ্ছে তাদেরকে কি নিষিদ্ধের দাবী উঠেছে কখনো? সবদিনই বিশে^র টেররিস্টরা অমুসলিম হিটলারের বশংবদ। আইএস এর উপর জাকির নায়েকের স্পষ্ট যুক্তি হচ্ছে এসব ইসলাম নয়। এটি জাকির নায়েকের কথাই নয়, এটি কুরআনের কথাও।
১৯৯৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রকাশিত কংগ্রেসী দলিলে বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের কল্পকাহিনী সাজিয়ে ৪৫ পৃষ্ঠার ভয়ঙ্কর কাহিনী সাজিয়ে পাইওনিয়ার পত্রিকায় বলা হয়, বাংলাদেশে এখন প্যান ইসলামিক আন্দোলন চলছে, লক্ষ্য ভারতের উত্তরপূর্ব অঞ্চলে দাঙ্গা উস্কিয়ে দেয়া। ঐ প্রতিবেদনে বলা হয় বাবরী মসিজিদ ধ্বংসের পর চট্টগ্রামে ৭০ জন হিন্দু মহিলা শ্রমিককে ধ্বংস করা হয়েছে এবং ভোলায় বারো হাজার মহিলা ও বালিকাকে কনকনে শীতের মাস ডিসেম্বরে তিনদিন ধরে উলঙ্গ অবস্থায় ঘুরানো হয়েছে (১৮৭ পৃষ্ঠা বাংলাদেশে “র”)। শ্রীলংকার “লংকা গার্ডিয়ান পত্রিকার সম্পাদক মারভিন ডি সিলভার ভাষায়, “দমনমূলক কুটনীতিসহ হস্তক্ষেপের যতরকম কায়দা কানুন আছে, তার সব কয়টি ভারত কোন না কোন ভাবে তার প্রতিবেশী রাষ্ট্র সমূহের উপর প্রয়োগ করেছে।”
ইসলাম অর্থ শান্তি, শান্তির বদলে অশান্ত নষ্ট ইসলাম প্রচার করতে নষ্টরাই এসব আইএসএর জন্মদাতা, কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠাতা। সবই ইসলাম নিধনের একসূত্রে গাঁথা নাটকের মঞ্চায়ন মাত্র। হলি আর্টিজেনের সহকারী বাবুর্চি জাকির হোসেন শাওনকে পুলিশই মেরেছে বলে তার মা মাসুদা বেগম সাংবাদিকের কাছে অভিযোগ করেন। রিক্সাওয়ালা বাবার ছেলে আর পিঠাওয়ালী মায়ের অশিক্ষিত ছেলে জাকের দু’দিন অগেও ছিল বাবুর্চি আজ ময়দানের সাজানো জঙ্গি। পরিবারের দাবী চিকিৎসাধীন অবস্থায় পুলিশের অমানবিক নির্যাতনে সে মারা যায়। আড়াই বছর ধরে নিখোঁজ ছিল শোলাকিয়া হামলার আটক সোহান। আবার একই নাটকের অংশ হিসাবে চার মাস ধরে নিখোঁজ ছিল পুলিশের গুলিতে নিহত জঙ্গি আবির রহমান। মতান্তরে ১৯-২৩ বছর বয়সী এ তরুণ এ বছরের ১লা মার্চ থেকে নিখোঁজ। রাজধানীর বসুন্ধরার বাসা থেকে মার্চের প্রথম তারিখে অনুমানিক বিকেল তিনটার দিকে বের হলে আর ফেরে নি, নিখোঁজ। প্রতিটি নিখোঁজ অল্প সময়ে কৌশলীর বিবর্তনে জঙ্গি। পরিবার থেকে ছিটকে গিয়েই কড়া ড্রাগে জঙ্গিরা আক্রান্ত থাকে, নিখোঁজ থেকে কড়া ড্রাগআসক্তি, তারপর চাপাতি, কোপানো, গলাকাটার উদাহরণ! সরজমিনে প্রচার পায় তাদের পোষাকে অস্ত্র রাখার বিশেষ চেম্বার। বিশে^র সব মুসলিমকে এ নকল ইসলাম থেকে জাতি উদ্ধারে সোচ্চার হতে হবে। এসব ইসলামের রাস্তা কোন যুগে ছিলও না, আজও নয়। শ্রেষ্ঠ ধর্মটির নামে কি ভয়ঙ্কর ভৌতিক মিথ্যাচার! সিলেটের ইলিয়াস আলী, সালাহউদ্দিনদের পরিণতি জাতিকে এ ডিজিটাল জঙ্গির পথ দেখাতে পারে! কাল হয়তো তারাই কোপাতে আসবে, বিচিত্র কি? প্রত্যক্ষদর্শীদের থেকে জানা যায় হিন্দীভাষীরা হামলার সাথে জড়িত ছিল, পুলিশের পক্ষ থেকে প্রচার করা হয় বাংলাতে বলা হয়, সব শেষ। বিতর্কীত পুলিশ ভাবমূর্তি রক্ষার্থে বলেছে লজ্জায় বাবুল আক্তারের কেইস প্রকাশ করতে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এবার গুলশান ও শুলাকিয়ার ঘটনায় তাদের ভাব আর মূর্তি কতদূর বজায় থাকছে? আনন্দবাজার প্রচার করছে আরো হামলা হবে। এ সংবাদও চাউর হয়েছে শাহবাগ কেন স্তব্ধ? গর্জে উঠ, পাশে আছি। সব করছে পাকিস্তান ও জামায়াতের বন্দী নেতা মীর কাশেম ফাঁসিতে যাওয়ার আগেই গল্প উড়ছে আনন্দবাজারের বরাতে! বিডিআর ঘটিয়েই ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানের ঘাড়ে দোষ চাপার দায় আমরা শুনেছি।
বাংলাদেশ কি সর্বস্ব হারাচ্ছে? শাহবাগ কাদের চাল ছিল, সেটি আজ আর লুকানো নেই, তারা নিজেরাই জানান দিচ্ছে। নওগাঁর চকিলাম সীমান্তে এক বাংলাদেশী ২৬৫ মেইন পিলারের কাছে গেলেই বিএসএফ গুলি করে, ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয় (১০ জুলাই )। সীমান্তে গুলি করার সময় প্রণব মুখার্জিদের বাংলাদেশের ভাই বোনের কথা কিন্তু মনে থাকে না! বাংলাদেশের ডেইলি ষ্টার মিথ্যা তথ্য প্রচার করে যে জাকির নায়েক মুসলিম দেশ মালয়েশিয়াতেও নিষিদ্ধ। তিনি প্রতিবাদ করেছেন, কমপক্ষে ১৩ মন্ত্রীর সাথে বৈঠক করেছেন, সরকারের সর্বোচ্চ সম্মানসূচক পদক লাভ করেছেন। রাজনৈতিক কারণে বৃটেনের তৎকালীন রক্ষণশীল সরকার তাকে ভিসা দেয় নি (নয়াদিগন্ত)। মিডিয়ার দুষ্ট দাগ রেখে ডেইলি ষ্টার সত্যের সাথে মিথ্যে গুলিয়ে প্রচার করেছে। ভারতের হিন্দুরা মুসলিম নিধনে খড়গ হয়ে আছে, মোটাদাগে এ শতাব্দীর শুরু থেকেই। গরুর মাংস কি খাদ্য না ভগবান দীর্ঘমেয়াদী বিতর্ক, এর সূত্রে হত্যা, মুসলিমদের ধর্মান্তরে তৈরী করা হয় ঘর ওয়াপসী প্রজেক্ট। বেশদিন থেকেই নায়েক ভারতের কিছু অঙ্গে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছিলেন, এবার যেন সর্বাঙ্গে রুদ্ধ করা যায়, সে প্রচেষ্ঠার অংশ এসব। কাশ্মীরসহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বিক্ষোভ হচ্ছে নায়েকের পক্ষে। প্রায় পনেরোশত বছর থেকে যে ধর্মকে ক্রুসেড করিয়ে, সংঘাত, যুদ্ধ, অমানবিকতা দিয়েও ধ্বংস করা যায় নি, তাকে কি সংখ্যা গরিষ্ঠ মুসলিম দেশে গুলশান শোলাকিয়ায় হামলা নাটক করে শেষ করা যাবে? এ প্রশ্ন গোটা জাতির বিরাট অংশের, আল্লাহ ভালো জানে, হয়তো এসব ঘটনাই বুমেরাং হবে এবং সম্বিতহারা জাতি প্রকৃত সত্যে উদবুদ্ধ হবে। আল্লাহ কুরআনে বলে, “তোমরা ষড়যন্ত্র করছো, আমি কিন্তু পরিকল্পনা করছি ।” তবে এক মিথ্যা প্রতিষ্ঠা করতে হলে শত মিথ্যার আশ্রয় নিতে হয়। তখন অস্তিত্ব রক্ষার্থে ক্রমাগত মিথ্যার চাষ হয়।
বিডিআর বিদ্রোহের সাথে অনেক মিল এবারের ঘটনাগুলির। এরা উন্নত প্রযুক্তি ও অস্ত্র ঠিকই ব্যবহার করছে কিন্তু মানুষকে বিভ্রান্ত করতেই সম্ভবত দা, চাপাতি, গলাকাটা, কোপানোর প্রযুক্তি যোগ হয়েছে। হামলাকারীকে যারা নিখোঁজ করেছে, তারাই অস্ত্রপকেটসহ পোশাক প্রস্তুত করে জঙ্গিকর্মের উপযুক্ত করেছে। এত অপকর্ম করেও সরকারের মুখে পদত্যাগের কথা নেই, বরং জাতীয় ঐক্যের আহবানকে সাথে সাথে প্রত্যাখ্যান করে লজ্জাস্করভাবে ভারতীয় কামান্ডোকে ডাকা হচ্ছে। দেশ বিধ্বংসী আচরণ ধন্য কাজেই উৎসাহ বেশী। যাদের অদূরদর্শি কর্মকান্ডে দেশ বিধ্বস্ত, যারা অলরেডি দেশের ভেতরে থেকেই নানান অপকর্মে যোগান দিয়ে যাচ্ছে, তারা নতুন করে আসা কতটুকু বাস্তব সম্মত? চারমাস থেকে নিখোঁজ রাজধানীর স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্কলাস্টিকা স্কুলের ছাত্র মীর সামিহ মোবাশি^র, নিখোঁজের দিনই তার বাবা মীর এ হায়াত কবীর গুলশান থানাতে ডায়রী করেন। নিবরাস ইসলামকে নিয়ে একই রকম বিস্ময় তার বনধু, স্বজন, সবার। এ ছেলে সন্ত্রাসবাদী, তীব্র বিস্ময় বাংলাদেশে! রোহান ইমতিয়াজ, মীর সামিহ মোবাশি^র, নিরবাস ইসলাম ও আন্দালিব রহমান। মিডিয়া প্রচার করছে এরা সবাই বাসা থেকে পালিয়ে যাওয়া জঙ্গি। মীর সামিহ কোচিং করতে গেছে, সেদিন তার ও লেভেল পরীক্ষা ছিল। গাড়ীচালক তাকে আনতে গেলে আর পায় নি। সহকারী বাবুর্চির বাবা মুমূর্ষ জাকির হোসেনকে হাসপাতালে দেখতে গেলে সে তাদের চিনতে পারে নি। শুধু মিনতি করছিল আমাকে আর মাইরেন না, ভাই। ঘুমন্ত অবস্থায়ও কাঁদছিল আর কাকুতি মিনতি করে বলছিল, আমারে আর মাইরেন না, আমারে ছাইড়া দেন। এইজন্যই ভারতে মমতা বলেন, বাংলাদেশের মুসলমান থেকে ভারতের মুসলমান ভালো আছে। আর সেটি যে কত ভালো তা আখলাকদের লাশ হওয়াই বাস্তবতা। চারদিকে চাউর হয়েছে ভারতের পরিকল্পনাতেই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ঘটে এই গুলশান হামলা। সত্যি না হলে প্রতিটি অঘটন খাপে খাপে কাকতালীয়ভাবে মিলে কেমনে?
বাংলাদেশ সরকার বিরাট একটি সময় থেকে গণতান্ত্রিক স্বৈরতন্ত্রের নামে যে হোলি খেলা চালিয়ে যাচ্ছে, তাতে গুলশান শোলাকিয়ার এ উপসর্গ সরকারের অন্য সব অপকর্মের সাথে বেশ মানানসই বলেই মনে হচ্ছে। সাম্প্রতিক রিজার্ভ লুট, তনু, মিতু হত্যা, বাবুল নাটক পর গুলশান হামলা। ৭১এ গণতন্ত্রের স্বপ্নের উপর গড়ে উঠা দেশটি ক্রমে সব নীতি বিসর্জন দিয়েছে। স্বাধীনতার স্বপ্নের কবর রচনা করে চলছে একের পর এক গুম হত্যা হামলা মামলা নাটক করে একাত্তর পূর্ব থেকে অনেক বেশী অপরাধ জমা করতে পেরেছে এরা, ময়দানের সাক্ষীরা অকপটে স্বীকার করবেন। অনেক সরকারী দালাল লেখকরা দাগ হালকা করতে বলেন দুই বেগমের লড়াই, যা এক বড় মিথ্যাচার, কিছু আগে কুলদীপ নায়ারও ঐ সুর রাখেন, প্রমাণ তার লেখা। যখন দালাল লেখকরা প্রকাশ্যে ধরা খাওয়া গদিনসীনকে স্পষ্ট করতে সমস্যা মনে করে, তখন ঐ কথাটি বলে গদির অপরাধকে হালকা করার চেষ্টা করে।
জামায়াত নাটক ভারতের স্বার্থে পরিচালিত এক মঞ্চায়ন, ভারত মুসলিম জ্ঞানে এদেরে নির্মূল করতে চায়। ভারতের এক বড় অংশ ভারতের মুসলিম নিধন যেমন চায়, একই জবানে বাংলাদেশেরও ঐ পরিণতিতে উল্লম্ফন করতে দেখা যায় অনেককেই। জিয়াউর রহমান জামায়াত ছিলেন না, তাকেও নির্মূৃল করা হয় তাদের কপট কৌশলে। বাংলাদেশের ৬৪ জেলার ৬৩ জেলাতে একই দিনে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা কে বা কারা ঘটায় সেটি দিবালোকের মতই স্পষ্ট হয়েছে। তখনকার বিএনপি সরকার এর উপর বস্তুনিষ্ট কাজ করে মূল অপরাধীর শাস্তিও দিয়েছে। আজকার সরকারের মত নকল ধড়পাকড় নাটক করে নি। তারপরও হাসিনা সরকার এটি বিরোধীর উপর চাপানোর চেষ্টা বা গোয়েবলস এর কায়দা বাদ রাখে নিা। সুযোগ পেলেই মিথ্যা অভিযোগের সানাই বাজে, মনে হয় কিয়ামত পর্যন্ত ওটি বাজবে। এবারে গুলশান হামলাকে বিএনপি জামায়াতের কাজ বলে প্রথমে পুরানো রেকর্ডের মত প্রচারে আওয়ামী দালালরা একবাক্যে সোচ্চার থেকেছে, প্রমান বাংলাদেশের মিডিয়া। যদিও থলের বিড়াল বেরিয়ে পড়লে দেখা যায় এরা অনেকেই আওয়ামী ঘরানার ছত্রচ্ছায়াতে তাদের পরিবার থেকেই বেড়ে উঠেছে। অসচেতন জনতারা নষ্ট মিডিয়াতে অতিরিক্ত দৃষ্টি দিয়ে বড় সময় থেকে প্রতারিত। কৌশলী মিডিয়া আজকের সমাজে বড় জঙ্গি! প্রতিটি নির্দোষকে দাগী আসামী করতে তার পোয়াবারো। ময়দানে জঙ্গি ধরা খেলেও তারা তাকে ময়দানের তুখোড় আইকন বানাতে পারে, এ দক্ষতাও স্পষ্ট দেখা গেছে এবারের প্রচারেও। আনসারুল্লা বাংলা টিম , জেএমবি এরা বর্তমান সময়ের কাকতাড়–য়া। এদের আলখাল্লার ভিতর আছে আসল লুকানো ভুত, এটি প্রচার থাকাতে সরকার নির্বিঘেœ অপকর্ম করতে পারছে। চলমান ঘটনার প্রতিটি দাগেই স্পষ্ট হচ্ছে কোথা থেকে নাটকের স্ক্রিপ্ট সাজানো হয়েছে। দুই দেশের সম্মতিতে গদি রক্ষা ও ইসলাম ধ্বংসের নাটক চলছে। পুলিশের জঙ্গি নাটকের চাঞ্চল্যকর তথ্য: খালেদা জিয়া এ লিংকে সচেতনের জন্য কিছু জমা। লিংকগুলি মুছে দেয়া হচ্ছে।
কেন কেন কেন?: এবারের ধরা খাওয়া জঙ্গিরা সবাই সামর্থবান ঘরের সন্তান, আওয়ামী ঘরানার সন্তানসহ জয়ের ডিজিটাল মাদ্রাসার কোটার বাইরে ধরা খাচ্ছে। বিস্ময়কর কিছু ব্যাপার হচ্ছে এরা প্রত্যেকেই নিজ পরিবার থেকে নিখোঁজ হয়ে যায়। জবাব হচ্ছে তাদেরে ধরে নিয়ে জিম্মি করে কাকতাড়–য়া বানানো হয়েছে। ঘটনার লাইভ সারা বিশে^ প্রচারিত হলেও বাংলাদেশে উদ্দেশ্যমূলকভাবে তা বন্ধ, কারণ ডাল মে কুচ কালা হায়? লাশকে নিয়ে নাটক কেন? কেন আওয়ামী পরিবারের জঙ্গির লাশ নেই? কেন পুলিশের লজ্জা? আওয়ামী আসামী পেলে পুলিশের লজ্জিত হবার কারণ কি? এরা কি তাদের শ^শুর, ভাসুর, মেয়ের যামাই? ফায়াজের লাশের ব্যাপারে কোরিয়ান ব্যক্তির ভিডিও ব্যতিক্রমী সংবাদ বিলি করছে, যদিও মিডিয়া ভিন্ন ইমেজ তৈরীতে ব্যস্ত। পুলিশের নানান অপকর্মে যখন মানুষ মরে তখন পুলিশের সাজা হয় না। নানান অপকর্ম করার জন্য অপকর্মী সরকার ২০১৩ সালেই তথ্য প্রযুক্তি আইন এমনভাবে সংশোধিত করেছে যাতে খুব সহজে মানুষকে ইচ্ছেমত কারাগারে নিক্ষেপ করা যায়। এগুলি জনতারা ভুলে গেলে চলবে কেন? কেন কর্তব্যরত পোশাক পরিহিত কুক সাইফুলকে জঙ্গি দেখানো হয়েছে আর আওয়ামী লীগের ছেলে ইমতিয়াজ খানের লাশ নেই, মানুষ ধারণা করছে শক্তির তলানীতে লাশ বেঁচে আছে। জীবন্ত ধরার কোন প্রচেষ্ঠা কেন নয়? ওরা জীবিত থাকলে সব থলের বিড়াল বেরিয়ে পড়তো!
জঙ্গিতে লাভ কার: দেখা যায় ঘটনা ঘটার আগেই ভারত ও সাইট ইনটেলিজেন্ট সব খবর জেনে যায়। খুব সহজ হিসাব, যে এসব ঘটাচ্ছে, সেতো সবার আগেই জানবে। বিশে^র সবদেশ আক্রমন হলেও ইসরাইল হয় না কেন? ইসরাইল অনৈতিকভাবে ফিলিস্তিনের উপর অমানুষিক বর্বরতা করে চলেছে, গোটা বিশ^ জানে। ১৯১৮ থেকে ১৯৪৮ পর্যন্ত ইহুদীবাদী ও বৃটিশ সেনাদের সম্মিলিত প্রচেষ্ঠায় ফিলিস্তিনী জনগণকে হত্যা ও তাদের অবৈধভাবে দখল করার কাজ চলছে। গোটা বিশ^ মুসলিমদের কবজা করতে চায়, এদেরে টেররিস্টি বানাতে স্থানে স্থানে ফল্স ফ্ল্যাগ নাটক হচ্ছে সবার নাকের ডগার উপর। মিডিয়া বুঝে না বুঝার ভান করে পড়ে আছে, তাদের কাছে দিবালোকের মত স্পষ্ট এর ভেতরের ক্ষত! এমন কি আমেরিকার প্রেসিডেন্টও ভালো করেই জানেন এসব মুসলিমরা করছে না, অন্যরা করছে, কৌশলে এরা হচ্ছে টেররিস্টের কাকতাড়–য়া মাত্র।
সারা দেশে সিসিটিভির কোটি টাকার বানিজ্য হলেও কোন আসামী কি কখনোই ধরা পড়ছে? ৪ পিস্তল, ২২ বোরের ফোল্ডেড রাইফেল সামাল দেয়ার ক্ষমতা কেন আমাদের সেনা পুলিশ র্যাব বাহিনীর জন্য এত জটিল? কেন বিডিআরের মতই দেরীতে অপারেশনে যাওয়া, যাতে কাকতাড়–য়াগুলো ধরা খায় আর মূল জঙ্গিরা পালাতে পারে। ইটালিয়ান, জাপানীরা কেন টার্গেট, পোশাক শিল্পের ও অন্য শিল্পের দায়ে তারা জড়িত বলেই! তার মানে এই পোশাক শিল্পসহ এদেশের অর্থনীতি যারা ধ্বংস করতে চায়, তারাই এই হত্যা চালিয়েছে। ২০১৫র অক্টোবরে ইতালী ও জাপানী হত্যাতে কারা ছিল, সেটি এর মাঝে সুস্পষ্ট হওয়ার কথা! গার্মেন্টস শিল্প ধ্বংসে প্রশ্নবিদ্ধ আচরণ লক্ষণীয়, অপরিচিত মানুষরা আগুন দেয়, ঘটনার পর প্রত্যক্ষদশীদের বক্তব্য প্রমাণ। গুলশানে ইন্টারনেট ফোন নেটওয়ার্ক বন্ধ থাকা অবস্থায়ও তারা বিশেষ সুবিধা পায়, যোগাযোগ করতে পারে। এমন কি ঐ দিনও তারা সাথে সাথে যোগাযোগ রাখতে পারে। সরকার কতদূর ব্যর্থ হলে এসব ধামাচাপা দিতে সাহায্য করে, আল্লাহই জানে। নিজ দেশের গোয়েন্দাদের অকর্মন্য ও প্রশ্নবিদ্ধ করছে সরকার নিজে, কি তাজ্জব অবস্থা!
অতি সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে নিয়োগে ভারতীয় বিজ্ঞাপন ও নিয়োগের প্রচার নিশ্চয় ভুলে যান নি দেশবাসী! তাই বাংলাদেশের বেড়া কিভাবে নিজেই নিজের ধান গিলে খায়? শত শত পুলিশের নিয়োগ হয়, দেশে তার কোন ঠিকানা নেই, ভুল তথ্যে তারা চাকরী পায় বিদেশীরা কিভাবে? যে রোগের ভাইরাস ছড়ায় বলে সন্দেহ, তাকেই কেন চিকিৎসার জন্য ডাকা হয়? এসব সচেতন বিবেক সম্পন্ন মানুষের উত্থিত প্রশ্ন। যে রিজার্ভ চুরিতে বারে বারে নাম আসে ভারতের, সেখানে বিশেষজ্ঞ কেন আনা হয় ভারতের রাকেশ আস্তানাকে? ৭১ পরবর্তী প্রতিটি ঘটনা দুর্ঘটনাতে বাংলাদেশের সর্বনাশে যে ভারতীয় “র” জড়িত থেকেছে তার ব্যাখ্যা কেন জরুরী নয়? প্রতিবেশীর সাথে সহমর্মীতা প্রকাশের যার নজির নেই বলাই বাহূল্য তাদের ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড (এনএসজি)র পক্ষ থেকে এত আগ্রহ প্রকাশ তাদের চিরাচরিত কপটতার পরিচয় কি স্পষ্ট করছে না? হাইকোর্ট রায় দিয়েছে কাশ্মীর ভারতের নয়। এবার কি বাংলাদেশের রায়ও বের হতে হবে যে, বাংলাদেশ ভারতের নয়। এরাই প্রতিবেশী বাংলাদেশ, ভূটান, নেপাল, শ্রীলংকা, মালদ্বীপ, ও পাকিস্তানের অভ্যন্তরে বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টির কৌশল গ্রহণ করে। এর মাঝে মালদ্বীপ ও ভূটানের স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি গিলে খেয়েছে। এরা প্রতিবেশী সবাই ভারতীয় বাজারের ক্রেতা। একমাত্র পাকিস্তানের সাথে ভারত পেরে উঠতে পারে না বলেই তাদের ঘুম হারাম। “র” ই বাংলাদেশের শান্তিবাহিনীর সৃষ্টিকর্তা, জিয়া হত্যার দাগেভরা, মুজিব হত্যায়ও রঙ্গিন, বাংলাদেশকে হিন্দু রাষ্ট্র বানানোর পায়তারা, স্বাধীন বঙ্গভূমি, তালপট্টি দখল, কাল্পনিক হিন্দু নির্যাতনের প্রচার, অতীতের গারোল্যান্ড আন্দোলন, নির্বাচন বানিজ্যে আওয়ামী ষড়যন্ত্রে বারে বারে জড়ায়, শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস, পুশইন পুশব্যাক, তসলিমা ইস্যু সৃষ্টি, দুর্গাপূজা ইস্যু সৃষ্টি, ৯৬এর ক্যুদেতা’র, এসব ভারতের “র”এর অপকীর্তিতে ভরা। তারাই জামায়াত ধ্বংস নাটকে জড়িয়ে আছে মাথা থেকে পা অবদি, তারা চায় এদেশে সেনাবাহিনীর কোন দরকার নাই। কত দূর ধ্বসে গেলে একটি জাতি প্রতিবেশীর সাথে এমন আচরণ করতে পারে, প্রশ্ন জমা রাখুন। তনু, মিতু, বাবুল, গুলশান, শুলাকিয়া সবই একই নাটকের ভাঙ্গা খন্ডাংশ মাত্র। মৈত্রী এক্সপ্রেসসহ দেশ থেকে ভারতীয় “র” কে সরিয়ে নিলে বাংলাদেশ মনে হয় বেঁচে যায়! বাংলাদেশের বাঁচার একমাত্র সমাধান দেশটিকে দুই নাম্বার পাকিস্তান হতে হবে বা তার চেয়েও শক্তিশালী। যে ভয় ইন্দিরার ঘুম হরণ করেছিল এই ভেবে যে, বাংলাদেশ যদি আরেকটি পাকিস্তান হয়ে যায়! ১৬ কোটি জনতার দেশ জেগে উঠলে অপরাধ পরায়ন ভারত নৈতিকতা হারানোর মানসিকতায় ধ্বসে যাবে অনায়াসে! ঐ নৈতিকতা ছিল না বলেই বহুগুণ বেশী যুদ্ধবল নিয়েও বদর প্রান্তরে যুদ্ধবাজ কুরাইশরা মাত্র ৩১৩ মুসলিমের সাথে ধ্বসে যায়, পরাজিত হয়।
সব দুর্যোগের ঘনঘটাই ভারত থেকে আগাম সংবাদে আসে, এবারও টাইমস অব ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়া টুডে, এনডিটিভি রিপোর্টে তা স্পষ্ট হয়। এমন কি ঘটনা ঘটার আগেই তাদের মিডিয়ায় অঘটনের সংবাদ প্রচার করে, এ প্রমাণ জমা আছে বারে বারেই, বিডিআর তার মাইল ফলক হয়ে আছে। অতীতে ভারতের আলোকপাত প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার তার কথামত না চললে আগুণ ধরিয়ে দেয়া হবে। ঐ প্রতিবেদনে এক শান্তিবাহিনীর কমান্ডারের উদধৃতি আসে “আজকাল পৃথিবীর কোন জঙ্গিবাহিনীতেই রকেট লাঞ্চার থাকাটা কোন ব্যাপারই নয়। তাই দিয়ে যদি একবার কাপ্তাই বাঁধ আর চন্দ্রঘোনা পেপার মিলটা উড়িয়ে দেয়া যায় (বাংলাদেশে “র” আবু রুশদ ১৪৪ পৃষ্ঠা)।” ভারতীয় কর্মতৎপরতা লক্ষ্য করলে এতে বেগ পেতে হয় না কারা এসব জঙ্গি তৎপরতাতে জড়িত। দাঁড়ি আর টুপিতে, জান্নাত, সেহরী, রোজা, আল্লাহু আকবার, লম্বা সালামের মাঝে ইসলাম সীমাবদ্ধ নেই। ইসলাম তার বাইরে আরো বহু বড় কিছু, একে ধ্বংস করা কোন কালেও সম্ভব হয় নি, হবেও না। গুলশান শোলাকিয়া নতুন কারবালার নাম। প্রতিটি কারবালা সংগঠিত হয় ইসলামকে ধ্বংস করতেই। আর সময়ে ষড়যন্ত্রী মুসলিমও জড়ো হয় ঐ কাজে কুরাইশের সাথে। তারপরও এটি মরে না, নতুন করেই জীবন পায়, জাগে, বেঁচে উঠে নতুনের ঝান্ডা ওড়ায়।
নাজমা মোস্তফা, ১০ জুলাই ২০১৬।
Leave a Reply