Articles published in this site are copyright protected.

সাংস্কৃতিক সংকট, ধর্মীয় সংকট, ভালবাসার সংকট, শিক্ষার সংকট, রাজনীতির সংকট, এখানে পাঁচটি সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে বাংলাদেশে। বাকী হাজারো সংকট একপাশে রেখে এখানের পাঁচটিকে বড় অস্তিত্ব সংকট বলেই মনে হচ্ছে। একটি দেশকে যখন সত্য থেকে বিচ্যুত করা হয় তখন সকল মিথ্যা তাদেরে গ্রাস করতে গোগ্রাসে ছুটে আসে। এসব ধারাবাহিক সংকট তারই নিদর্শন। উলংগপনা, অশ্লীলতা, বেলাল্লাপনা কোনদিনও এ সমাজের সংস্কৃতি ছিল না। মঙ্গল প্রদীপ কপালের টিপকে অনেকে নিজের সংস্কৃতি করতে চাচ্ছেন, এসব একটি জাতির দেউলিয়াত্বের নিদর্শন। মুসলিম সুলতানদের পৃষ্ঠপোষকতাতে বাংলা ভাষার মর্যাদা বৃদ্ধি হয়। মুসলিম শাসনামলে তারা ফারসি ভাষাতে তাদের উন্নত রুচিবোধের সংস্কৃতি ও ধর্মের আলোকে সাহিত্য রচনা করেন। কিন্তু ইংরেজ তাদের কপট স্বার্থে সব উলট পালট করে দেয়। মুসলিমদেরে রিক্ত ও নিঃস করতে যা করা যায় বৃটিশরা তাই করে আর হিন্দুরা ওটিকে একটি মোক্ষম সুযোগ হিসাবে নীতিহীনতার জোয়ারে ভেসে ইংরেজকে বাড়তি সহযোগিতা দেয়। যার সহজ পরিণতিতে একই সময়ে রবীঠাকুররা নোবেল জমা করলেও নজরুলের ভাগে জমে কারাগারের শিকল। এটি ঐতিহাসিক বাস্তবতা। ইংরেজ হিন্দুদের হাতে জমিদারি যেমনি তুলে দেয় ঠিক তেমনি তুলে দেয় শিক্ষাসহ চাকুরীর সব পাওনা। হিন্দুদের সামনে আশায় ভরা ভবিষ্যত আর মুসলিমদের জন্য জমে নিরাশার তিমির অন্ধকার। ঘুরিয়ে হলে বলা চলে হিন্দু বৃটিশ এক পক্ষ আর মুসলিমরাই প্রকৃত বৃটিশ বিরোধী শক্ত পক্ষ। সুলতানি আমলেই বাংলাভাষা তার সংস্কৃত দাসত্ব থেকে মুক্তি পেল। অতপর ১৮০০ খৃষ্টাব্দে কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠার পর একদল পন্ডিতকে বাংলাভাষার দায়িত্ব দেয়া হলে তারা প্রচলিত মুসলমানি অপবাদে সব সহজ বাংলাকে বাদ দিয়ে তাতে সংস্কৃত শব্দ বসিয়ে বিশুদ্ধ ভাষার প্রচলন করে। ওটি করেই তারা ক্ষান্ত হয় নি। সে সময় পাঠ্যক্রমকেও হিন্দুওয়ানী রুপ দেয়া হয়। বিদ্যালয় থেকে মুসলিম বাচ্চারাও যাতে হিন্দু হয়ে বের হয়, তার চেষ্ঠা করা হয়।

আপিল করলেই আবদুল হামিদের প্রেসিড়েন্ট পদ চলে যাবে ড তুহিন মালিক

এর উপর তখনকার সময়ের একটি প্রতিবাদলিপির নমুনা দিচ্ছি। “আজকাল বিদ্যালয়গুলিতে যেসব সাহিত্য ও ঐতিহাসিক গ্রন্থ পাঠ করা হচ্ছে তা হিন্দুর দেব-দেবী, মুনি-ঋষি, সাধু-সন্ন্যাসী, রাজা-মহারাজা, বীর বীরাঙ্গনা ইত্যাদির উপাখ্যান ও জীবন চরিত আদতেই পূর্ণ। হিন্দুর ধর্মকম, ব্রত-অর্চনা, আচার-ব্যবহার ইত্যাদির বর্ণনাতেই ঐ সময়ের পাঠ্যগ্রন্থ অলংকৃত। মুসলিমদের পয়গম্বর, পীর,অলি-দরবেশ, নবাব-বাদশাহ, পন্ডিত-ব্যবস্থাপক, বীর-বীরঙ্গনা, আদি ও উপাখ্যান বা জীবন বৃত্তান্ত অথবা ইসলামের নিত্য কর্তব্য, ধর্মাধর্ম, ব্রত, উপাসনা, খয়রাত, জাকাত, এসবের মাহাত্মরাজির নামগন্ধও ঐ সকল পুস্তকে নেই। বরং উল্টো মুসলিমদের প্রতি ঘৃণা বিদ্বেষের ভাবই বর্ণিত হয়েছে। প্রথম বর্ণ পরিচয় থেকেই বালকগণ রামের গল্প, শ্যামের কথা, হরির কাহিনী, কৃষ্ণের চরিত্র যদু-মধু শিব ব্রহ্মা রাম সাম ইত্যাদি নামেই পাঠ আরম্ভ হয়।  কাজে কাজেই আমাদের সরলমতি কোমল প্রকৃতি শিশুগণ বিদ্যালয়ে পঠিত হিন্দুগণের উল্লেখিত বিষয়গুলির প্রতি দৃঢ়বিশশাসী হয় এবং আমাদের জাতীয় পবিত্র শাস্ত্র ও ইতিহাস উপাখ্যান ধর্মকর্মাদির বিষয় অপরিজ্ঞাত থাকে। (ছাত্রজীবনে নৈতিক শিক্ষা: মোহাম্মদ ফকির উদ্দিন সরকার, বাসনা ২য় ভাগ, ২য় সংখ্যা জৈষ্ঠ ১৩১৬। মুস্তাফা নুরউল ইসলাম: সাময়িক পত্রে জীবন ও জনমত বাংলা একাডেমী, ঢাকা ১৩৭৭ পৃষ্ঠা ৩০-৩১)”।

কি কারণে সেদিন শিক্ষা সংস্কৃতিতে আগুয়ান মুসলিম জাতি পিছিয়ে পড়েছিল তার সামান্য আলোকপাত উপরে বর্ণনাতে স্পষ্ট। যে বিদ্যা ধারণ করলে নিজের বিশশাস হারাতে হয়, সে বিদ্যা আহরণে স্বভাবতই মুসলিমের আকর্ষন কম হওয়ারই কথা। এ ব্যাপারে বেইলী মন্তব্য করেন, “সত্য কথা বলতে গেলে বলতে হয় যে, আমাদের জনশিক্ষা পদ্ধতি বিষয়ে মুসলমানদের প্রবল মানসিকবৃত্তি উপেক্ষা করা হয়েছে। প্রাদেশিক ভাষায় শিক্ষা মুসলিমদের মনোপুত হয়নি এবং হিন্দু শিক্ষকও তাদের নিকট গ্রহণযোগ্য হয় নাই। তাছাড়া গ্রামে যে শিক্ষা দেয়া হতো তা তাদের শ্রদ্ধার আসন পেতে বা ধর্মীয় কর্তব্য পালন করতেও সাহায্য করতো না। ঐ শিক্ষা ব্যবস্থার মাঝে তাদের ধর্ম শিখার কোন সুযোগ ছিল না। যেখানে মুসলিমরা সাধারণ শিক্ষার সাথে ধর্ম শিক্ষাকে অত্যাবশ্যক বলে মনে করত। মিশনারী বাংলা স্কুলে পড়ানো হতো খৃষ্টধর্মীয় বই। কলকাতা ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের সংস্কৃত ও বাংলার পন্ডিতরা এমন সাহিত্য রচনা করেন যেখানে মুসলিমরা সংস্কৃত উদ্ভুত বাংলার সাথে পরিচিত ছিল না। তাছাড়া পাঠ্য পুস্তক ছিল হিন্দুধর্ম ও উপকথা সমৃদ্ধ বিশশাসে ভরপুর।

যুক্তি ও সত্যের সাথে যাদের এতদিনের বোঝাপড়া ছিল, তারা এখানে দারুণভাবে হোচট খায়। যে জাতি কাউকে তার শরিক শক্তি ভাবতে পারে না, সে কেমন করে নত মস্তকে মূর্তির স্তব গাইবে? হিন্দুরা জাতিভেদের জটিলতাতে ডুবে থাকা অন্ধকার শক্তি পূজক জাতি যেখানে মুসলিমরা ভাতৃত্ববোধ, মানবিকতা, সাম্যতা ও সহঅবস্থানে বিশশাসী জাতি। তাই পন্ডিত জওহরলাল তার Glimps of World History গ্রন্থে বলেন, নিজের উপর আস্থা এবং বিশশাস একটি বড় জিনিস। ইসলাম ধর্মের বানী হলো, তারা সবাই এক, ভাই ভাই। এতে করে লোকে গণতন্ত্রের কতকটা স্বাদ পেল। তৎকালে খৃষ্টধর্ম যেভাবে বিকৃত হয়ে পড়েছিল তাতে ঐ ভাতৃত্বের বাণীতে কেবল আরব জাতিই নহে, অন্যান্য দেশের অধিবাসীদের মনেও সাড়া জাগিয়েছিল।” কথাগুলি স্বীকার করতে নেহরু বাধ্য ছিলেন। কেউ তাকে এসব প্রচারে বাধ্য করেনি। তিনি পরোক্ষে তার সংকীর্ণ জাতিকে আলো বিলি করতেই এসব উদাহরণ টানেন।

After A long time Mahmudur Rahman (দীর্ঘদিন পর মিডিয়ার সামনে মাহমুদুর রহমান)

প্রায়ই লিংকগুলি মুছে দেয়া হচ্ছে। বাস্তবতা এখানেই নীচে।

ধৈর্য হারাবেন না, কুলাঙ্গার শামীম আফজলের কথাগুলো একটু শুনুন

 

 

জেনারেল শ্লীমান মোগল যুগের শিক্ষার উচ্চ মানের প্রশংসা করে লিখেন, ভারতীয় মুসলমানদের মধ্যে শিক্ষার যে রুপ ব্যাপক প্রসার হয়েছে পৃথিবীর খুব কম সম্প্রদায়ের মাঝেই সেরকম হয়েছে। যে ব্যক্তি কুড়ি টাকা মাইনের চাকুরী করে সে তার পুত্রের জন্য সাধারণত প্রধানমন্ত্রীর পুত্রের সমান শিক্ষার ব্যবস্থা করে। যুবকগণ ব্যাকরণ তর্কশাস্ত্র যা গ্রীক ও ল্যাটিন ভাষায় শিক্ষা নেয় তা তারা আরবী ও ফার্সি ভাষাতে আয়ত্ত করে। অক্সফোর্ড হতে যুবকগণ সদ্য যে জ্ঞান নিয়ে বের হয়ে আসে মুসলিম যুবক সাত বৎসরে সে জ্ঞান আহরণ করে মাথায় শিরস্ত্রাণ পরিধান করে। সে অনর্গল সক্রেটিস, এরিষ্টটল, প্লেটো, হিপোক্রেটিস, গেলেন ও ইবনে সিনা সম্বন্ধে আলোচনা করতে পারে। তিনি আরো বলেন, আমাদের কোন পদস্থ শিক্ষিত মুসলিমদের সাথে আলোচনাতে বসলে শ্রেষ্ঠ ইউরোপীয় ব্যক্তিগণও নিজেদের জ্ঞানের অপ্রতুলতা উপলব্ধি করতে পারেন। টলেমির জ্যোতির্বিদ্যা ও এরিষ্টটলের ন্যায় শাস্ত্র সম্বন্ধে প্রত্যেক মুসলমান ভদ্রলোকের জ্ঞান আছে। ইবনে সিনার মাধ্যমে হিপোক্রেটিস ও গ্যালেনের ভাবধারার সহিত তাদের পরিচয় আছে। তারা দর্শন সাহিত্য বিজ্ঞান ও কলা বিষয়ে আলাপ আলোচনা করতে পারে। উইলিয়াম হান্টার এটিও স্বীকার করেন যে সেই যুগে ভারতে প্রচলিত শিক্ষা অন্যান্য শিক্ষা পদ্ধতি হতে বহুলাংশে উৎকৃষ্টতর ছিল। কিভাবে মুসলিমদের নিষ্ক্রিয় করা হয় এসব তার উদাহরণ। এডাম তৎকালীন সরকারের নীতির সমালোচনা করেন। সরকার কর্তৃক মহসিন ফান্ডের অপব্যবহারের সমালোচনা করে হান্টার লিখেছেন, এই আত্মসাতের অভিযোগ সম্বন্ধে আলোচনা বড়ই কষ্টকর, কারণ এই অভিযোগ অগ্রাহ্য করা অসম্ভব। এসব বিষয়ে আলোচনা এসেছে ১৯৯৭ সালে প্রকাশিত নাজমা মোস্তফার “পূজারী দোয়ার খোলো” বইটির ‘গোঁড়ামীর গোঁড়ার কথা’ কলামটিতে ২৫-৪১ পৃষ্ঠা।

ধারণা করছি একই পূর্ব রোগের ভাইরাস পুনরায় বর্তমান বাংলাদেশে ভর করেছে ! শোনা যাচ্ছে যারা পাঠ্য পুস্তক সংশোধনী করছেন তারা পূর্ববর্তী বৃটিশ নীতির গোলামীর আদলে জাতি ধ্বংসে শক্তির চাঁদোয়ার নীচে শক্ত দাগ রাখছেন। প্রতিটি নববর্ষ উপলক্ষে দেশবাসী যে ‘বিলাই নৃত্য’ করেন তা হাস্যকর সন্দেহ নেই। আমার পূজারী দোয়ার খোলো গ্রন্থতে প্রায় ২০ বছর আগে এসব শুরুর সময়টিতে এর উপর একটি চ্যাপ্টার ছিল “পুতুল খেলা” আমার নিজের পুতুল খেলা দিয়ে তার শুরুটা। আমি প্রস্তাব রেখেছিলাম পান্তা ইলিশের বদলে ডাল ভাত খাওয়াই যুক্তিযুক্ত। কারণ বাংলা দেশের অনেক অঞ্চলের মানুষ আমার নিজের অঞ্চলের মানুষ জীবনেও পান্তা খায় না। আমি বা আমার পরিবারের কেউই আজ অবদি জীবনেও ঐ জিনিসটি খায় নি বলেই জানি। কিন্তু ডাল ভাত খায় না এমন অঞ্চল নেই, যদি বছরের প্রথম দিনটিতে এরকম কিছু খেতেই হয় তবে এটি সবার খাবার হতে পারে। অতীত যুগে মানুষ অনেক অর্থহীন কাজ করেছে যদিও আজকের দিনে বিবেক সম্পন্ন মানুষকে কেন অর্থহীন কাজ করতে হবে? অর্থপূর্ণ কাজ করেই শেষ করা যাচ্ছে না সেখানে কেন অর্থহীন অপকাজে সময় ব্যয় করা? সমৃদ্ধ বাংলাদেশ কেমন করে এত দেউলিয়া একটি দেশ হয়ে গেল?

বিয়েতে মেহদীর জায়গায় জবর দখল করে ‘গায়ে হলুদ’ নামের এক নব্য সংস্কৃতির কোলে ঢলে পড়লো গোটা জাতি ! যেখানে সারা পাড়ার ছেলে বুড়ো ঐ বরকনে ছেলেমেয়ের কপালে হুড়মুড় করে ভেঙ্গে পড়ে। সবাইকে হাত দিয়ে ছোঁয়ে কপালে ওটি দিতেই হবে। এভাবে গোটা জাতি অপকর্মের দিকে এক পা বাড়া কপাল ছোঁয়া সংস্কৃতির গোলাম বনে গেল আমাদের চোখের সামনে। হলুদ মাখাতেই হবে নাহলে সংস্কৃতি বাঁচেনা। এভাবে ‘গায়ে হলুদ’ নামে জাতির অধঃপতন শুরুর ক্ষতটি ‘গায়ে মরিচ’এর আদলে সবার দৃষ্টির অলক্ষ্যে সলতেতে আগুন দিয়ে ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। ‘গায়ে হলুদ’ নামে আমার একটি লেখা আছে, এসব শুরুর সময়েই মনে পড়ে এসব কান্ডকারখানা দেখে ঐ রকম অনুষ্ঠানে উপস্থিত এক আপা বলে বসেন, খাবারের ম্যানুতে মাংসটা কিসের হবে? পাঠার? মান সম্মান নিয়ে অস্তিত্ব নিয়ে দেশ বাঁচুক, মানুষ বাঁচুক মাথা উঁচু করে। আজো মনে পড়ে যখন আমার দেবরের ছেলের বিয়েতে তার শাশুড়ী খুব বেঁকে বসেন এসব চলবে না। তখন বলা হয়, বর কনে বিদেশ যাবে ওসব না হলে তারা বর্ডার পার হবে কেমনে। এয়ারপোর্টে ওরা তো বিয়ের অনুষ্ঠান দেখতে চাইবে। আর গায়ে হলুদ থাকলে সুবিধা, এসব ছবিতে ভিসার সব কাজ সহজ হবে। বুঝেন ঠেলা ! কেমন করে ওরা রোগের বিজ ঢুকিয়ে দিচ্ছে পুত পবিত্র অঙ্গনে ! মিথ্যে দিয়ে হলেও এভাবে সমাজ তা সামাল দেয় ! এ ঘটনাটি হবে ১৯৯৫ সালের কথা। বলা চলে ক্ষণটিতে, নাচানাচিতে বেশ পোক্ত তারা। কিনতু আগের প্রজন্ম তখনও বাগড়া দিতেন এটি তার প্রমাণ !

বৈশাখী নাচানাচি আমরা অনেক আগে এভাবে দেখি নি। বিগত সময়ে প্রথম শুরু হলো এ নর্তন কুর্দন নাচন। তাই সেদিন আমার কলামটি সাজাতে হয় ‘পুতুল খেলা’ নাম দিয়ে। বাঙ্গালী জাতি এই বুড়ো বয়সে পুতুল খেলছে আমি খেলেছিলাম আমার শিশুকালের অবুঝ বয়সে। এবার শুনছি মূলত পান্তা নাকি হিন্দুরাই খায়, তাও প্রথম বৈশাখে উপবাস করে পরদিন বাসি ভাতে পানি দিয়ে হয়তো সখ করে এক টুকরো ইলিশ জুড়ে দেয়। ছিহ ! মুসলিম ছিহ ! ধিক্কার তোমাদের এত অধঃপতন দেখে ! বছরের পয়লা দিনে এ কেমন অধঃপতন তোমাদের ! নববর্ষের নামে যেসব নষ্ট কর্ম প্রতিবছর শুনি, এর বাইরে কি কিছুই করার নেই। নববর্ষে বুদ্ধিজীবি গুরুজনেরাও নাচে শরিক হতে দেখেছি যা নিয়ে কপট জনেরা নানা উৎকট মন্তব্য করেছে। নববর্ষের ময়দানে আনা ভৌতিক জীবগুলোর মতনই যেন দেশবাসীরা বদলে গেল এই সল্পসময়ের ফাঁক গলিয়ে। মনে পড়ে সে বছর মনে হয় একদম শুরুর সময় মানে ১৯৮৫এর দিকের ঘটনা। সে বছরটিতে সারা রাত আমার সামনের বাসাতে এক জুটি আধুনিকতার নামে একটু বাড়ন্ত, এক দঙ্গল ছেলেপেলেরা বেশীরভাগই ছেলে কারণ তেমন কোন মেয়ে এসবে তখনও যোগ দেয়নি। সবাই যখন বের হয়ে যায় নাচতে নাচতে তখন পেছন থেকে গৃহকর্তী মেয়েটি চিৎকার দিতে থাকে এই স্যুপ খেলে না, স্যুপ খেলে না। যা শুনতে হয়েছে আমার বাসা থেকে, কারণ তাদের হৈ হুল্লোড়ে আমরাও এক ধারার অদ্ভুত রকমের নতুন নাড়া অনুভব করছিলাম। প্রথম দিকের বছরে ওটি ছিল স্যুপে সীমাবদ্ধ, আজ সেটি এসে পান্তাতে ঠেকেছে।

পয়লা বৈশাখে যদি হিন্দুরা উপবাসই করে পান্তা খায় তবে তাতে কেন মুসলিম জনতার ভাগ বসানো ! এ দাস মনোবৃত্তি চৌর্যবৃত্তির উদাহরণ মনে হচ্ছে।  বাংলাদেশের অনুসারীদের জন্য এসব কোন উদারনৈতিক উদাহরণ নয়। দরকার হলে ঐ দিন গরীবের জন্য কিছু করো, অর্থবোধক, জীবন স্বার্থক কিছু করো যেখানে জাতির জন্য ভালো জমা করা যায়। নবী মোহাম্মদ (সঃ) বিদায় হজের সময় প্রকাশ্যে বিশাল জনসভাতে তার শেষ ভাষন দেন। তখন কিছু মূল্যবান কথা বলেন যার প্রতিটি কথাই স্মরণ করার মত। তিনি সে সময় ও এর বাইরেও এসব ব্যতিক্রমী অসাধারণ মূল্যবান কথা বলে যান। অনুসারীদের জন্য সাবধান বানী রেখে যান। সেটি হচ্ছে খৃষ্টানদেরে দেখে তাদের নবীর অনুকরণে তাকে যেন ঈশশরের আসনে বসিয়ে দেয়া না হয়। যার ভয়ে মুসলিমরা তার একটি ছবিও সামনে আনে না। তিনি বলতেন আমি একজন সাধারণ মানুষ আব্দুল্লাহর পুত্র মুহাম্মদ। খৃষ্টানরা একজন নবীকে বানিয়ে ফেলে ঈশশরের পুত্র, একমাত্র জাত সন্তান। ওসব কর্ম একেশশর ধর্মধারীর কি পরিমাণ অধঃপতন ! চিন্তাশীলদের জন্য ভয়ংকর উদাহরণ ! যার জন্য নবী বার বার এ সাবধান বাণী উচ্চারণ করে যান। সেদিন ধর্ম হিসাবে এ স্পষ্ট সিলেবাস ‘কুরআন’ শুধু পশুর চামড়াতে আর খেজুরের পাতায়ই লিখা ছিল না। ওটি পোঁতা ছিল প্রায় প্রতিটি সাহাবীর অন্তরে।

শক্ত করে বলা হয় নবী গত হলেও যেন আর কোন জিনিস আমদানী করা না হয় ধর্মের নামে। তিনি বার বার সাবধান করে যান ধর্মের নামে কোন সংযোজন বিয়োজন চলবে না। আর সিলেবাস তোমাদের কাছে রইলো। বিদায় হজ্জ্বের ১০ হাজার জনতাকে তিনি উচ্চস্বরে সবাইকে সাক্ষী রেখে জানতে চান আমি কি আমার কর্তব্য পালন করতে পেরেছি? উপস্থিত জনতারা উচ্চস্বরে তাদের সম্মতি স্বীকৃতি প্রকাশ করে। সাথে সাথে তিনি আল্লাহকে সাক্ষী রেখে বলেন, হে আল্লাহ ! তুমি সাক্ষী রইলে তারা যা বলছে। উপস্থিত ঐ জনতার উপর কিছু দায়িত্ব চাপিয়ে দেন, তা হচ্ছে যারা এখানে উপস্থিত নেই, যারা আরো পরে আসবে এই আমাদের কথাও বলে যান। তোমরা যারা এখানে উপস্থিত আছ তোমরা এ খবর পরবর্তীদের কাছে পৌছে দিবে। তারা যেন সততা ন্যায়বাদিতা ও সঠিক আল্লাহভীতির পথে চলে। বাংলাদেশের মুসলিমরা বাস্তবিকই পথ হারিয়েছে। সে সিলেবাস আজও হারিয়ে যায় নি। এত সহজে এটি হারাবার নয়। সাবধান বাণীটি হচ্ছে সীমার বাইরে ধর্মের নামে যা সংযোজিত বিয়োজিত তাকে বলা হবে বিদআত। আর যারা বিদআত করবে তারা নির্ঘাৎ জাহান্নামে যাবে। কুরআন বলে, “আল্লাহকে বাদ দিয়ে তোমাদের জন্য কোন অভিভাবক নেই এবং সাহায্যকারীও নেই” (সুরা আনকাবুত ২২ আয়াত)। এবার আপনারা কোথায় যেতে চান সেটি আপনারাই নির্ধারণ করুন। আল্লাহ আপনাদের সহায় হোন।

নাজমা মোস্তফা,   ১৬ই ফেব্রুয়ারী ২০১৬।

 

Leave a comment